মঙ্গলবার, ২৭ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

নাটোরের চামড়া আড়তে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি

নাটোর প্রতিনিধি

কোরবানির ঈদ ঘিরে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চামড়ার বাজার নাটোরের চকবৈদ্যনাথের আড়তগুলোতে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। ব্যস্ত শ্রমিক-কর্মচারীরা। শেষ সময়ে লবণের দাম বৃদ্ধির কারণে খরচ বাড়বে চামড়া সংরক্ষণের। ঢাকার ট্যানারি মালিকদের কাছে বকেয়া আদায় পড়ে আছে ৬০ কোটি টাকা। এর পরও ভালো বেচাকেনার প্রত্যাশা আড়তদার ও ব্যবসায়ীদের। সেই সঙ্গে কাঁচা চামড়া সংরক্ষণের জন্য প্রধান উপকরণ লবণও সংরক্ষণ রাখা হয়েছে। অন্যদিকে শ্রমিক সংকট যেন না হয় সেজন্য আগে থেকে ব্যবসায়ীরা অগ্রিম টাকা দিয়ে শ্রমিক ও কর্মচারীদের ভাড়া করেছেন।

বর্তমানে আড়তগুলোতে অলস সময় পার করছেন শ্রমিক, কুলি, ব্যাপারী ও মালিকরা। চামড়ার দাম কমলেও বেড়েছে লবণের দাম। বিপাকে চামড়া ব্যবসায়ীরা। কোরবানির পশুর চামড়া কিনে লোকসানের শঙ্কায় তারা। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চামড়ার বাজার নাটোরের চকবৈদ্যনাথ। কোরবানির ঈদ ঘিরে ধোয়ামোছাসহ আড়তগুলোকে প্রস্তুত রেখেছেন আড়তদার ও শ্রমিক-কর্মচারীরা। আড়তদার ও ব্যবসায়ীরা জানান, লবণের দাম বেশি হওয়ার কারণে এ বছর ক্ষতির আশঙ্কা করছি। গত বছর দর ছিল ৭০০-৭৫০, এবার চলছে ১২০০-১২৫০ টাকা। ব্যবসায়ীরা জানান, চামড়া থেকে লবণের দাম বেশি। ছোট চামড়ায় ৫ কেজি ও বড় চামড়ায় ১০ কেজি লবণ লাগে। লবণের এত পরিমাণ দাম হয়েছে যে, চামড়া বাঁচানো দায় হয়ে যাচ্ছে। ২০১৪ সাল থেকে ঢাকার ট্যানারি মালিকরা চামড়া নিয়ে গেছে, কেউ টাকা দেয়নি। এবার আশা করছি, ৫ থেকে ৬ লাখ গরুর চামড়া এবং ৮-১০ লাখ ছাগলের চামড়া আমদানি হবে। নাটোরের চকবৈদ্যনাথে ছোট-বড় মিলিয়ে চামড়ার আড়ত এক শতাধিক। আড়তগুলোতে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ বগুড়া, পাবনা, রংপুর, গাইবান্ধা, ঠাকুরগাঁও, নওগাঁ, কুষ্টিয়াসহ সারা দেশের প্রায় ৩৫ জেলার চামড়া আসে। তারপর সেই কাঁচা চামড়া লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করা হয়। প্রতি বছর কোরবানি ঈদের সময় দেশের মোট ৪৫ থেকে ৫০ ভাগ চামড়া নাটোরের চামড়ার আড়ত থেকে ট্রাকযোগে ঢাকার ট্যানারিগুলো সারা বছরই কমবেশি বেচাকেনা হলেও দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই চামড়ার বাজারে মূল ব্যবসা হয় কোরবানির ঈদের সময়ে। আড়তগুলোতে ধোয়ামোছাসহ এখন চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। প্রতি বছরের মতো এবারও উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলো থেকে গরু-ছাগলের চামড়া আসবে এমন প্রত্যাশা আড়তদারদের। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বেধে দেওয়া দামেই চামড়া কিনবেন বলে জানিয়েছেন আড়তদাররা। লবণের দাম কামানোসহ নির্বিঘ্নে চামড়া পরিবহনে প্রশাসনের সহযোগিতা চান তারা। জেলা চামড়া ব্যবসায়ী গ্রুপের সভাপতি মকসেদ আলী বলছেন, এবারের ঈদে ৮ থেকে ১০ লাখ পিস পশুর চামড়া এই বাজারে কেনাবেচা হবে। ঢাকার ট্যানারি মালিকদের কাছে ৫০ কোটি টাকা বকেয়া পড়ে থাকায় পুঁজি সংকটে ভুগছেন ব্যবসায়ীরা। কোরবানির ঈদের সময় চকবৈদ্যনাথ বাজারে ৫০০ কোটি টাকার চামড়া কেনাবেচা হবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। চামড়া পাচার রোধে ভ্রাম্যমাণ আদালতসহ কঠোর নজরদারি করবে প্রশাসন। জেলা প্রশাসক আবু নাছের ভুইয়া বলেন, ‘চামড়া পাচারের বিষয়ে কঠোর নজরদারি রাখা হবে। মোবাইল কোর্ট থেকে শুরু করে সব ধরনের পুলিশি টহল থাকবে।’

সর্বশেষ খবর