শিরোনাম
সোমবার, ৩ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

কুমিল্লা শহরে ভরাট হচ্ছে অর্ধশতাধিক পুকুর

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

কুমিল্লা শহরে ভরাট হচ্ছে অর্ধশতাধিক পুকুর

কুমিল্লা নগরীতে ভরাটের পথে রয়েছে অর্ধ শতাধিক ছোট-বড় পুকুর। ময়লা ফেলে, দোকান, বাড়ি তুলে সেগুলো ভরাট করা হচ্ছে। কোথাও কচুরিপানা জমিয়ে পুকুরের রূপ বদল করা হচ্ছে। এদিকে ব্যক্তি মালিকানাধীন পুকুরগুলো আনুষ্ঠানিক মাটি ভরাট করা হচ্ছে। বিভিন্ন সূত্রমতে, নগরীর ২৭টি ওয়ার্ডে তিন শতাধিক পুকুর রয়েছে। যদিও এ নিয়ে সিটি করপোরেশনের কোনো নির্দিষ্ট তালিকা নেই। সূত্রমতে, সম্প্রতি নগরীর ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের দ্বিতীয় মুরাদপুর এলাকার নমশুদ্র পাড়ার শতবর্ষী নারায়ণ পুকুর ভরাট চলছে। এক একরের বেশি ভূমির পুকুরের মালিক আবু ফয়সাল রায়হান। তাকে প্রধান আসামি করে অজ্ঞাত পাঁচজনের বিরুদ্ধে এ মামলা হয়েছে। অধিদফতরের সিনিয়র কেমিস্ট মো. রায়হান মোর্শেদ বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় এই মামলা করেন। পরিবেশ অধিদফতর কুমিল্লার উপপরিচালক মোসাব্বের হোসেন মুহাম্মদ রাজীব জানান, নারায়ণ পুকুরের বিষয়ে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি অভিযোগ আসে। ২৮ ফেব্রুয়ারি সরেজমিনে গিয়ে সত্যতা পান কর্মকর্তারা। পুকুরটি ভরাট বন্ধ করে পূর্বের অবস্থানে ফিরিয়ে নিতে পরপর দুটি চিঠি দেওয়া হয়। গত ৩ এপ্রিল তাকে পরিবেশ অধিদফতর কুমিল্লা কার্যালয়ে হাজির করে ভরাটকৃত মাটি অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হলেও তিনি তা করেননি।

এ ছাড়া নগরীর ঝারু পুকুর, সংরাইশের একটি পুকুর ভরাট নিয়ে মামলা দেওয়া হয়েছে। ভরাটের প্রক্রিয়ায় থাকা হাতি পুকুর নিয়েও মামলা দেওয়া হবে। সরেজমিন দেখা গেছে, নগরীর পুরাতন চৌধুরীপাড়া টিএন্ডটি মসজিদ সংলগ্ন পুকুর দীর্ঘদিন পরিষ্কার করা হচ্ছে না। এতে কচুরিপানা জমে আছে। পুকুরের ভিতরে কলাগাছ জন্মেছে। কাপ্তান বাজার এলাকায় পরিবেশ অধিদফতরের অফিসের সঙ্গে পুকুরেও ময়লা ফেলা হচ্ছে। যদিও অফিস কর্তৃপক্ষ ময়লা না ফেলতে সাইনবোর্ড ঝুলিয়েছে। এদিকে কাপ্তান বাজার এলাকার ছোট কয়েকটি পুকুর ময়লা ফেলে ভরাট করতে দেখা গেছে। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন কুমিল্লার সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর মাসুম বলেন, দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে কুমিল্লা নগরীর পুকুর। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পুকুরের বিকল্প নেই। ময়লা জমে থাকা পুকুরগুলো পরিষ্কার করতে হবে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসন, সিটি করপোরেশন ও পরিবেশ অধিদফতরকে আরও কঠোর ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে। কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. সফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা সম্প্রতি নগরীর শতাধিক পুকুরের তালিকা করেছি। ধারণা করছি এই সংখ্যা দুই শতাধিক হবে। কিছু পুকুর কৌশলে ভরাট হচ্ছে বলে ধারণা পেয়েছি। আমরা যেখানে অভিযোগ পেয়েছি, সেখানে চিঠি পাঠিয়েছি। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদফতরের বেশি কাজ করার সুযোগ রয়েছে। কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় নগরীতে পুকুরের প্রয়োজন রয়েছে। পুকুর ভরাট করতে তার ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন করতে হয়। আমরা ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন করছি না। ভরাটের খবর পেলে যৌথভাবে সেকাজ বন্ধের ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।

সর্বশেষ খবর