ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া ওই সরবকারি হাসপাতালে রোগীদের চেয়ে দালালদের কদর এখন বেশি। সেখানকার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাশেদ আল মামুনের ছত্রছায়ায় এসব অপকর্ম হচ্ছে বলে জানা গেছে। এ কারণে স্বাস্থ্যসেবা ভেঙে পড়ায় চরম দুর্ভোগে আছেন রোগী ও তার স্বজনরা। জানা গেছে, ডা. রাশেদ আল মামুন ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদানের পর থেকেই একের পর এক অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। করোনাকালীন বিভিন্ন সংগঠন থেকে দেওয়া শতাধিক অক্সিজেন সিলিন্ডার বাইরে বিক্রি করে দিয়েছেন। এর ফলে হাসপাতালটিতে চরম অক্সিজেন সংকট দেখা দিয়েছে। প্যাথলজিকাল বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার টাকা বিনা ভাউচারে তার পছন্দের লোক দিয়ে আদায় করে থাকেন। সপ্তাহে রবিবার ও বুধবার নিয়মিত অপারেশন করা হতো হাসপাতালটিতে। এতে প্রান্তিক অঞ্চল থেকে সাধারণ রোগীরা স্বল্প খরচে চিকিৎসা পেত। স্থানীয় কিছু বেসরকারি ক্লিনিকের মালিকদের সঙ্গে যোগসাজশ করে অপারেশনের পরিমাণ কমিয়ে দেন তিনি। সে কারণে সাধারণ রোগীরা সরকারি স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সম্প্রতি অপারেশন না করার জন্য এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে চিঠি দিয়েছেন এবং তাকে বিভিন্ন রকম ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই হাসপাতালের একাধিক চিকিৎসক জানান, ডা. রাশেদ আল মামুনের একক খবরদারিতে জেলার স্বনামধন্য হাসপাতালটির আজ স্বাস্থ্যসেবা ভেঙে পড়েছে। তিনি আমাদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বরাদ্দকৃত দামি ইনজেকশন ও ওষুধ নিজের মালিকানা ঝিনাইদহ শহরের আল-মামুন জেনারেল হাসপাতালে ব্যবহার করেন। এ জন্য ভর্তিকৃত রোগীরা সরকারি ওষুধ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সরকারি বরাদ্দকৃত গাড়িটিও ব্যক্তিগত কাজে সব সময় ব্যবহার করে থাকেন তিনি। কেউ এর প্রতিবাদ করলেই শিকার হতে হয় ভয়াবহ পরিণতির। এসব অভিযোগ অস্বীকার করে শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাশেদ আল মামুন বলেন, সব নিয়মকানুন মেনেই হাসপাতাল পরিচালনা করছি। আমি পদায়নের জন্য চেষ্টা করছি। যা স্থানীয় এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যান জানেন। আমার কর্মকাণ্ডের জন্য অফিস আমাকে পদায়ন দিচ্ছেন। এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন ডা. শুভ্রা রানি দেবনাথ জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে তদন্ত করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হবে।