শিরোনাম
রবিবার, ৯ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

খানাখন্দে ভরা হিলির প্রধান সড়ক

হিলি প্রতিনিধি

খানাখন্দে ভরা হিলির প্রধান সড়ক

খানাখন্দে ভরা দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের একমাত্র প্রধান সড়কটি দ্রুত সংস্কার করা না হলে বাংলাদেশে পণ্য রপ্তানি বন্ধের হুমকি দিয়েছেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। এমন অবস্থায় স্থলবন্দরের প্রধান সড়কটির বাস্তব অবস্থা সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ। ভূমি অধিগ্রহণ-সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনসহ দ্রুত রাস্তার সংস্কার কাজ শেষ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি দিনাজপুর থেকে হিলি স্থলবন্দরের চেকপোস্ট সড়কের টেম্পোস্ট্যান্ড মোড়ে এসে পৌঁছান। এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পৌর মেয়র, স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাসহ বন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীরা তাকে স্বাগত জানান। পরে জেলা প্রশাসক হিলি স্থালবন্দরের খানাখন্দে ভরা প্রধান সড়কটির বিভিন্ন স্থান হেঁটে পরিদর্শন করেন এবং সড়কটির কাজের বাস্তব চিত্র দেখেন। এ সময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও ব্যবসায়ী নেতারা সড়কের বিভিন্ন সমস্যার কথা জেলা প্রশাসকের কাছে তুলে ধরেন। সড়ক পরিদর্শন শেষে জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, হিলি স্থলবন্দরের এই প্রধান সড়কটি ফোর লেনে উন্নীতকরণের কাজ চলমান রয়েছে। এর মধ্যে দুই লেনের একটি সড়ক নির্মাণাধীন। তার কাজ এখন চলমান রয়েছে। এটি সম্পূর্ণ হয়ে গেলেই এর ওপর দিয়ে চলাচল শুরু হয়ে যাবে। এর পরে নিচের যে বাকি অংশ মাটির রাস্তা রয়েছে সেটির কাজ শুরু করে দিবে। এ সড়কের টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ আছে কাজেই এখানে আর কোনো সমস্যা নেই। তবে একটি রাস্তার কাজ ধরলে তার কিছু নিয়ম রয়েছে। আর আমি যদি বলি এখন এক ঘণ্টার মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে তা কিন্তু হবে না। তাদের মালামাল আসাসহ কিছু নিয়ম রয়েছে, সেগুলো তো মেইনটেন করতেই হবে। তবে যত দ্রুত সম্ভব গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি মেরামতের কাজ শেষ করা হবে। এ ছাড়া বৃষ্টির কারণে সড়কে যে সমস্ত ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে তা মেরামতের কাজ ইতোমধ্যেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শুরু করেছে। এ ছাড়া সড়কটির কাজ দ্রুত শেষ করতে ভূমি অধিগ্রহণসহ অন্য যে সব জটিলতা রয়েছে তা দ্রুতই সমাধান করা হবে। তবে সড়কের জায়গা নিয়ে মামলা হলে আদালতে নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আমরা কিন্তু এগোতে পারি না। তবে আমরা আজকেই এখান থেকে অফিসে গিয়ে মামলার কাগজপত্র যেগুলো রয়েছে সেগুলো দেখব। অবশ্যই এ বিষয়ে আদালতে কন্টেস্ট করব এটা আপানাদের নিশ্চয়তা দিচ্ছি। মোটকথা বন্দরের আমদানি-রপ্তানি গতিশীল রাখতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। পরে তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সভাকক্ষে প্রশাসনের স্থানীয় কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়ে এক বৈঠক করেন। এ সময় সেখানে হাকিমপুর উপজেলা চেয়ারম্যান হারুন উর রশীদ, ভাইস চেয়ারম্যান শাহিনুর রেজা শাহিন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত রায়, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোকলেদা খাতুন মিম, পৌর মেয়র জামিল হোসেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগ দিনাজপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মনসুরুল আজিজ, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার লিয়াকত আলী, হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেনসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত, হিলি স্থলবন্দরের খানাখন্দে ভরা প্রধান সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়ে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভারতের হিলি এক্সপোর্টার্স অ্যান্ড কাস্টমস ক্লিয়ারিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বাংলাহিলি কাস্টমস সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে।

ওই চিঠিতে দাবি করা হয় স্থলবন্দরের চেকপোস্ট গেটের রেললাইন থেকে শুরু করে পানামা হিলি পোর্টের গেট পর্যন্ত সড়কটি ভাঙাচূড়া ও বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে একেবারে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ সড়ক দিয়ে পণ্যবাহী ট্রাক নিয়ে চলাচল করতে গিয়ে ট্রাকের চাকা ফেটে যাওয়া, এক্সেল ভেঙে যাওয়াসহ ট্রাক উল্টে গিয়ে ক্ষতির মুখে পড়তে হয় বলে দাবি তাদের। তেমনি ট্রাকের চালক ও সহকারীরা দুর্ঘটনায় পড়ে আহত হচ্ছেন। তাই অতি দ্রুত সড়কটির সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী করা না হলে এই বন্দর দিয়ে ভারত থেকে আমদানিকৃত পণ্য নিয়ে বাংলাদেশে না আসার ঘোষণা দিয়েছেন ভারতীয় ট্রাক চালকরা। একইভাবে পণ্য রফতানি করতে গিয়ে সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে ট্রাক উল্টে গিয়ে রফতানিকৃত পণ্যের মান নষ্ট হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধসহ বৃহত্তর আন্দোলনে যাওয়ার বিষয়টি জানিয়েছেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা।

সর্বশেষ খবর