খাগড়াছড়িতে ডেঙ্গুর পাশাপাশি নতুন করে যোগ হয়েছে ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব। এক মাসে জেলায় ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন ১৩০ জনের বেশি। জুনের শেষ দিকে মাটিরাঙ্গা ও গুইমারা উপজেলায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়াতে থাকে। স্থানীয়দের অভিযোগ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও মশকনিধন কার্যক্রম না থাকায় পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতে বংশ বিস্তার করছে ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়ার জিবাণুবাহী মশা। স্বাস্থ্যবিভাগ পরিস্থিতি মোকাবিলায় পর্যাপ্ত প্রস্তুতির কথা বললেও বাস্তবে তা না থাকায় এ অঞ্চলে বাড়ছে মশাবাহিত রোগ-বালাই। জুন ও চলতি মাসের ৮ তারিখ পর্যন্ত জেলায় ম্যালেরিয়া এবং ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছেন অত্যন্ত ১৩০ জন। স্থানীয় স্বাস্থ্যবিভাগ বলছে, আক্রান্তদের বেশির ভাগই মাটিরাঙ্গা পৌরসভা এবং গুইমারা উপজেলার জালিয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা। ইতোমধ্যে মাটিরাঙ্গা পৌর এলাকাকে ডেঙ্গুর হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোর পাশাপাশি অনেকে চিকিৎসার জন্য যাচ্ছেন জেলা সদর হাসপাতাল এবং চট্টগ্রামে। মাটিরাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ডা. মিটন ত্রিপুরা জানান, ঈদুল আজহার ছুটিতে বাইরে থেকে লোকজন আসায় এবং শহরে ময়লা-আর্বজনা পরিষ্কার না থাকায় ডেঙ্গু-ম্যালেরিয়া রোগী বাড়ছে। এলাকাবাসী জানান, ময়লা-আবর্জনা এবং নালা-নর্দমা সময়মতো পরিষ্কার না করায় মাটিরাঙ্গায় মশাবাহিত রোগে বেশি মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। মশা নিধনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেই বলেও অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। মাটিরাঙ্গা পৌর মেয়র শামছুল হক জানান, মশার বিস্তার ঠেকাতে নিধন কার্যক্রম জোরাল করতে সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। শিগগিরই মশকনিধন কার্যক্রম শুরু করা হবে। খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন ডা. ছাবের আহমদ জানান, পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে প্রত্যেকটি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগ নির্ণয়ের কিট সরবরাহ রয়েছে। একইভাবে এখানে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ রোধেও ব্যবস্থা রয়েছে বলে জানান এ কর্মকর্তা। উল্লেখ্য, খাগড়াছড়িতে জুন মাসে ম্যালেরিয়া আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন ৭১ জন এবং ডেঙ্গু আক্রান্ত ২১ জন। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ডেঙ্গু আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ৩২ জন। এখনো জেলায় ডেঙ্গুতে কেউ মারা যাওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
