মঙ্গলবার, ১১ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

সিন্ডিকেটে মাথায় হাত আম চাষিদের

বাবুল আখতার রানা, নওগাঁ

সিন্ডিকেটে মাথায় হাত আম চাষিদের

নওগাঁয় আমের পাইকারি বাজার -বাংলাদেশ প্রতিদিন

নওগাঁয় এবার আমের চাষ গত বছরের চেয়ে বেশি হলেও দাম প্রতি মণে ৬০০-৮০০ টাকা কম। চাষিদের অভিযোগ, ব্যবসায়ী ও আড়তদারদের সিন্ডিকেটের কারণে আমের বাজারে ধস নেমেছে। ৪০ কেজিতে মণ হলেও তাদের দিতে হচ্ছে ৫২-৫৩ কেজি। এতে আম চাষিরা বিপাকে পড়েছেন। প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা। জানা যায়, নওগাঁর বাজারে প্রচুর আম দেখা গেলেও চাষিদের মুখে হাসি নেই। মৌসুমের প্রথম দিকে আমের বাজার কিছুটা ভালো থাকলেও এখন দাম কম। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এর প্রধান কারণ সিন্ডিকেট। পত্নীতলা উপজেলার আম চাষি বীর মুক্তিযোদ্ধা মঞ্জুর এলাহী জানান, গত বছর আম্রপালি বিক্রি হয়েছিল ৩০০০-৩২০০ টাকা মণ। এবার ১২০০-২৩০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। এত কম দামে আম বিক্রি করে কৃষকের ব্যাপক লোকসান গুনতে হচ্ছে। এ ছাড়া ৪৫ কেজিতে মণের জায়গায় দিতে হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৩ কেজি। আম চাষি কছিম উদ্দীন জানান, কম দামে আম বিক্রি হওয়ায় পরিচর্যা খরচও উঠবে না। এবার তাপমাত্রা অনেক বেশি ছিল, যা আম চাষের জন্য ক্ষতির। আবহাওয়ার কারণে উৎপাদনের খরচ বেশি হয়েছে। কম দামে বিক্রি করায় লোকসান আর লোকসান। সাপাহারের আম চাষি সোহেল রানা জানান, সরকারিভাবে দুটি ক্যারেটসহ ৪৮ কেজিতে মণ নেওয়ার কথা থাকলেও সেখানে নেওয়া হচ্ছে ৫২-৫৩ কেজি- বাজারে এটাই সবচেয়ে বড় সমস্যা। এতে চাষিরা আম চাষে উৎসাহ হারাবেন। সাপাহার আম আড়তদার সমিতির সভাপতি কার্তিক সাহা জানান, কৃষক যেমন সমস্যায় রয়েছেন তেমনি আড়তদার মালিকরাও সমস্যায় আছেন। ১ হাজার মণ আম কিনলে সরকারকে রাজস্ব দিতে হয় ৩ হাজার টাকা। তবে ওজনে বেশি নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন তিনি। কার্তিক সাহা আরও জানান, পাশের কানসাট ও রহনপুরে ক্যারেট ছাড়াই ৫২  কেজিতে মণ নেওয়া হয়। আর আমাদের এখানে ৪৮ কেজিতে আম কেনা হয়। এর প্রভাবে সাপাহারে ব্যবসায়ী কম আসছেন। ওজন সব জায়গায় সমান হলে আমের দাম আরও বেশি হতো। সাপাহার বাজার আম চাষি সমিতির সহসভাপতি খন্দকার হাবিবুর রহমান বলেন, কৃষকের কষ্টের ফসল এভাবে ওজনে বেশি নেওয়া দুঃখজনক। আম বাজারে অনিয়মের ব্যাপারে তিনি প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন। পাশাপাশি বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা আরও জোরদার করার দাবি জানান। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানান, আম বিক্রি করতে যে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে সে বিষয়ে স্থানীয় এবং জেলা প্রশাসন ও আম আড়তদার সমিতির সঙ্গে মতবিনিময় হয়েছে। দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন তিনি।

সর্বশেষ খবর