শুক্রবার, ১৪ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

ঝুঁকি নিয়ে পদ্মা-মেঘনা পাড়ি

নেয়ামত হোসেন, চাঁদপুর

ঝুঁকি নিয়ে পদ্মা-মেঘনা পাড়ি

ইঞ্জিনচালিত নৌকায় উত্তাল নদীতে যাত্রী পারাপার -বাংলাদেশ প্রতিদিন

চাঁদপুর সদর উপজেলার দুটি ইউনিয়নের অবস্থান পদ্মা ও মেঘনা নদীর পশ্চিম তীরে। এ ইউনিয়নের বাসিন্দাদের দৈনন্দিন কাজ, পড়াশোনা ও চিকিৎসার জন্য জেলা শহরে আসা-যাওয়ার একমাত্র মাধ্যম ইঞ্জিনচালিত নৌকা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিশু, নারী-পুরুষ নিয়মিত ট্রলারে উত্তাল পদ্মা-মেঘনা পাড়ি দেন।

পদ্মা ও মেঘনা নদীর পশ্চিম পাড়ে চেয়ারম্যান ঘাট, মাস্টার ঘাট, মোল্লার বাজার ও মালের বাজারে নৌকা ঘাট রয়েছে। চাঁদপুরের ডাকাতিয়া নদীর পুরানবাজার মদিনা মসজিদ ঘাট থেকে ট্রলারে পশ্চিম পাড়ের লোকজন যাতায়াত করেন। পুরানবাজার ঘাট থেকে ৩৩টি যাত্রীবাহী ট্রলার নিয়মিত চলাচল করে। প্রতি ট্রলারে নেওয়া হয় ৩৫-৪০ জন যাত্রী। ভাড়া জনপ্রতি ৪০ টাকা। ট্রলারগুলোতে চার-পাঁচটি বয়া ও সাত-আটটি লাইফ জ্যাকেট দেখা গেলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুব কম। ট্রলারের মাঝি হানিফ বকাউল বলেন, আমরা যাত্রীবাহী ট্রলারে মালামাল পরিবহন করি না। ঝড়-বৃষ্টি হলে ট্রলার কম চলাচল করে। আমাদের জীবিকা নির্বাহ করতে হিমশিম খেতে হয়। ইব্রাহীমপুর ইউনিয়নের চরফতেজংপুর বাসিন্দা জয়নাল মাল জানান, প্রতিদিন চরাঞ্চল থেকে সবজি ও দুধ শহরে আনা হয়। চরাঞ্চলের মানুষ ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করেন। বেশি সমস্যা হয় গর্ভবতীদের সদর হাসপাতালে আনার ক্ষেত্রে। রাজরাজেশ্বর ইউপি চেয়ারম্যান হযরত আলী বেপারী বলেন, বর্ষাকাল ছাড়াও সব মৌসুমেই চরাঞ্চলের মানুষ ট্রলারে যাতায়াত করেন। ঝুঁকিপূর্ণ হলেও তাদের কিছুই করার নেই। কারণ জেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগের আর অন্য কোনো মাধ্যম নেই। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় অনেক সময় যাত্রী ও মালামালসহ ট্রলার ডুবে যায়। এ পর্যন্ত বহু যাত্রী প্রাণ হারিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অনেক ব্যবসায়ী। চাঁদপুর পাউবো অফিস সূত্রে জানা যায়, পদ্মা-মেঘনা-ডাকাতিয়া নদীর সংযোগস্থল হলো মোলহেড। এই তিন নদীর পানি তিন দিক থেকে প্রবাহিত হয়ে মোলহেডে এসে মিশে যাওয়ায় সার্বক্ষণিক এখানে বিশাল ঘূর্ণাবর্ত হয়। এ ঘূর্ণাবর্ত এলাকা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। স্থানটি সরকারিভাবে ঝুঁকিপূর্ণ নৌপথ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বর্ষা মৌসুমে মোহনার এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে গোল বৃত্তের আকারে খুঁটি পুঁতে দেওয়া হয়। চাঁদপুর নৌবন্দর কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন বলেন, এখানে প্রতিদিন চরাঞ্চলের শত শত যাত্রী ট্রলার দিয়ে পদ্মা-মেঘনা-ডাকাতিয়া নদী পারাপার হয়। ট্রলারগুলো নৌপরিবহন অধিদফতরের আওতায়। তারা নিবন্ধনের আওতায় আনলে ট্রলার মালিকরা জবাবদিহিতার আওতায় আসত। নৌপরিবহন ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আশিকুর রহমানকে অনেকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

সর্বশেষ খবর