শনিবার, ১৫ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

পানির অভাবে বিপাকে রাজবাড়ীর পাটচাষিরা

দেবাশীষ বিশ্বাস, রাজবাড়ী

পানির অভাবে বিপাকে রাজবাড়ীর পাটচাষিরা

পানির অভাবে পাট জাগ দিতে না পারায় বিপাকে পড়েছেন রাজবাড়ীর পাটচাষিরা। চলতি মৌসুমে পাট কাটা শুরু হয়েছে। তবে জেলার অধিকাংশ খাল, বিল ও জলাশয়ে তেমন পানি নেই। যে পরিমাণ পানি রয়েছে, তা পাট পচানোর জন্য যথেষ্ঠ নয়। অনেকটা বাধ্য হয়ে পাটচাষিরা পাট কেটে খেত থেকে ঘোড়ার গাড়িতে করে দূরের জলাশয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। অনেকেই তাদের পুকুরের মাছ বিক্রি করে পাট জাগ দেওয়ার ব্যবস্থা করছেন। এতে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে জেলার চলতি মৌসুমে ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল পাটের আবাদ হয়েছে। গত বছরের চেয়ে প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে অতিরিক্ত পাটচাষ হয়েছে। পাটের ফলন ভালো হবে বলে আশা কৃষি বিভাগের। গতকাল সকালে রাজবাড়ী সদরের মূলঘর ও বালিয়াকান্দি উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা যায়, কৃষক খেত থেকে পাট কাটা শুরু করেছেন। তবে সেভাবে পাট কাটা শুরু করেননি কৃষক। বৃষ্টির পানির জন্য অপেক্ষা তাদের। কৃষকদের কাটা পাটখেত থেকে রাস্তায় নিয়ে আসছেন। সেখান থেকে ঘোড়ার গাড়িতে করে বিভিন্ন পুকুরে পাট জাগ দিচ্ছেন। বালিয়াকান্দি উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের পাটচাষি প্রাণেশ বিশ্বাস। তিনি বলেন, আমি এ বছর ৫ বিঘা জমিতে পাটচাষ করেছি। পানির অপেক্ষায় থেকে পাট কাটা শুরু করেছি। এক বিঘা জমির পাট কেটে বাড়ির পুকুরে জাগ দিয়েছি। আমার আর জাগ দেওয়ার জায়গা নেই। বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করছি। আমার পাট মারা যাওয়া শুরু হয়েছে। আমি বিপাকের মধ্যে রয়েছি। সদর উপজেলার মূলঘর ইউনিয়নের কৃষক কাসেদ শেখ। তিনি বলেন, তিন বছর ধরে রাজবাড়ীর পাটচাষিরা বিপাকের মধ্যে রয়েছে। আমি পাট কাটা শুরু করেছি। আমার ৫ বিঘা জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে। জমি থেকে ঘোড়ার গাড়িতে করে পাট হড়াই নদীতে নিয়ে যাচ্ছি। আমার উৎপাদন খরচ ২৫ শতাংশ (এক পাখি) জমিতে প্রায় ১ হাজার ৩০০ টাকার মতো বেড়ে যাচ্ছে। মূলঘর ইউনিয়নের আরেক কৃষক সহাদেব বিশ্বাস বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন হয়েছে। আগে সঠিক সময়ে বৃষ্টি হতো। পাট কেটে সরাসরি বিলের পানিতে জাগ দেওয়া যেত। গত তিন বছর পাট জাগ দেওয়া নিয়ে খুব ঝামেলা হচ্ছে। পাট চাষের জন্য রেমন রেডিং পদ্ধতি কোনো কাজে আসেনি। কৃষি বিভাগ দীর্ঘদিনে এই পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। এই পদ্ধতি কোনো কাজে আসেনি। বর্তমানে কৃষক অন্যের পুকুর লিজ নিয়ে পাট জাগ দিচ্ছেন। খরচ বেড়ে যাচ্ছে অনেক টাকা। গত বছরের থেকে এই বছর মণপতি পাটের দাম ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা কম। বর্তমানে ২ হাজার ৬০০ টাকা প্রতি মণ পাট বিক্রি হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর