রবিবার, ১৬ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

হিমাগারে প্রচুর আলু বাজারে সংকট

শামীম কাদির, জয়পুরহাট

হিমাগারে প্রচুর আলু বাজারে সংকট

জয়পুরহাটের আলুর গুদাম -বাংলাদেশ প্রতিদিন

জয়পুরহাটের হিমাগারগুলোতে বিপুল পরিমাণ আলু মজুদ থাকলেও বিক্রি করছেন না ব্যবসায়ীরা। পিঁয়াজ, কাঁচা মরিচ, আদা, রসুনের পর এবার আলুর দামের কারসাজিতে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতা। এক মাস আগেও জয়পুরহাটের বিভিন্ন বাজারে অ্যাস্টেরিক, কার্ডিনাল ও ডায়মন্ড জাতের প্রতি কেজি আলুর খুচরা মূল্য ছিল ৩০ টাকা। সেই আলু এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজিতে। দেশি পাকড়ি (লাল গুটি) আলু ৪০ টাকার স্থলে এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, বড় ব্যবসায়ীরা হিমাগার থেকে আলু বিক্রি না করায় বাজারে সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে এক মাসের ব্যবধানে জয়পুরহাটের বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি আলুতে দাম বেড়েছে ১০-১৫ টাকা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, জয়পুরহাটে এবার রেকর্ড পরিমাণ আলু উৎপাদন হয়েছে। ৩৮ হাজার ৬২৫ হেক্টর জমিতে আলু ফলেছে ৯ লাখ ২৪ হাজার ৭৬০ মেট্রিক টন। মৌসুম শেষে জেলার ১৯টি হিমাগারে ব্যবসায়ী ও কৃষকরা আলু সংরক্ষণ করেছেন ১ লাখ ৬৫ হাজার মেট্রিক টন। গতকাল পর্যন্ত মজুদের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ২৫ হাজার ৮৮০ মেট্রিক টন। জেলায় আলুর চাহিদা রয়েছে ৫৫-৬০ হাজার মেট্রিক টন। জেলায় উৎপাদিত উদ্বৃত্ত আলু ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় এমনকি বিদেশেও রপ্তানি করা হয়। এলাকার অধিকাংশ প্রান্তিক কৃষক আলু উৎপাদনের পর তা বিক্রি করেন। আর ব্যবসায়ীরা কিনে হিমাগারে মজুদ করেন। বর্তমানে কৃষকের ঘরে আলু নেই। হিমাগার থেকে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ অনেক কম। এবার হিমাগার ভাড়াসহ ৬০ কেজির প্রতি বস্তা অ্যাস্টেরিক, ডায়মন্ড ও কার্ডিনাল আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করতে খরচ হয়েছে ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকা। বর্তমানে হিমাগারে সেই আলু বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৭৫০ টাকায়। দেশি পাকড়ি জাতের আলু সংরক্ষণে হিমাগার ভাড়াসহ খরচ হয়েছে দেড় হাজার। এখন হিমাগারে প্রতি বস্তা আলু বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৩০০ টাকায়। সংরক্ষণের মাত্র চার মাসের ব্যবধানে প্রতি বস্তা আলুতে ব্যবসায়ীদের লাভ থাকছে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা। সদর উপজেলার বানিয়াপাড়া গ্রামের আলু ব্যবসায়ী আবদুল মালেক বলেন, ‘তিন চার দিনেও এক ট্রাক আলু ঢাকায় পাঠাতে পারছি না। চাহিদা থাকলেও আলু পাওয়া যাচ্ছে না। বাজারের ঊর্ধ্বগতি দেখে হিমাগারে মজুদ করা আলু ব্যবসায়ীরা বিক্রি করছেন না’। কালাই উপজেলার আলু ব্যবসায়ী সাইদুর রহমান বলেন, হিমাগারে আলু মজুদ করে গত তিন বছর লোকসান হয়েছে। তখন আমাদের কেউ খোঁজ নিতে আসেননি। এবার আলুর দাম একটু বেশি হতেই সবাই চিৎকার শুরু করেছে। জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা রতন কুমার রায় বলেন, ১৯টি হিমাগারে ১ লাখ ৬৫ হাজার মেট্রিক টন আলু সংরক্ষণের পর কয়েক মাসে প্রায় ৪০ হাজার মেট্রিক টন বিক্রি হয়েছে। এখনো বিশাল মজুদ আছে। সেই হিসাবে আলুর দাম এত বাড়ার কথা নয়। আমরা বাজার মনিটরিং করছি। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ানোর চেষ্টা করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক রাহেলা পারভিন বলেন, জেলায় আলুর কোনো ঘাটতি নেই।

সর্বশেষ খবর