বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

বাড়ছে মাদকসেবীর দৌরাত্ম্য

সৈয়দপুর প্রতিনিধি

বাড়ছে মাদকসেবীর দৌরাত্ম্য

নীলফামারীর সৈয়দপুরে মাদকসেবীর দৌরাত্ম্য দিন দিন বাড়ছে। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর শহরের পাড়া-মহল্লার সড়ক ও নির্জন এলাকা তাদের দখলে চলে যায়। জমজমাট হয়ে উঠছে বিভিন্ন প্রকার মাদকের কারবারিতে। আর রয়েছে চোয়ানি মদের (বাংলা মদের) বেচাকেনা। শহরের কমপক্ষে ২৫টি স্পটে চোয়ানি মদের ব্যবসা চলে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ও পুলিশি অভিযান না থাকায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে বিশিষ্টজনরা অভিযোগ করেছেন। এদিকে ইয়াবা ও ফেনসিডিলের দাম বৃদ্ধি এবং র‌্যাবের কড়া নজরদারি থাকায় এ দুই মাদকের ব্যবসায়ীরা অত্যন্ত গোপনে তাদের অনৈতিক কর্মকা পরিচালনা করছে। পরিচিত মাদক সেবনকারী ছাড়া অন্য কারও কাছেই তারা বিক্রি করে না। ফলে এমন নেশাপণ্য সহজে আর মিলছে না। এ কারণে মাদকসেবীরা চোয়ানি মদের প্রতি ঝুঁকে পড়েছে। দামেও অনেক সস্তা। মিলেও হাতের নাগালে। ৫০ টাকা থেকে ১০০ টাকায় চোয়ানি মদ খেয়ে নেশা জমে ওঠে। আর ফেনসিডিল ও ইয়াবার নেশায় খরচ হয় চোয়ানি মদের তুলনায় অনেক বেশি টাকা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কিংবা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ঢিলেঢালাভাব থাকায় চোয়ানি মদ বিক্রি নিয়ন্ত্রণে আসছে না। বিশেষ করে শ্রমজীবী কিশোর ও দিনমজুর মানুষরা চোয়ানি মদের সবচেয়ে বড় খরিদদার। এরা অল্প টাকায় নেশা করে পাড়া-মহল্লার সড়কগুলোতে এবং সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত মাতলামি করে। এতে বিষাক্ত হয়ে উঠছে বসবাসের এলাকাগুলো। এসব নেশাখোররা এতই বেপরোয়া যে, কেউ কোনো প্রতিবাদ করলেই তাদের হাতে নাজেহাল হতে হয়। এজন্য কেউ মানসম্মানের ভয়ে অভিযোগ করা তো দূরের কথা টু শব্দটি করতে চান না। শহরের তিনটি বড় স্পটে চোয়ানি মদের পাইকারি বেচাকেনা হয়। আর খুচরা বিক্রি হয় ২৫টি স্পটে। পাইকারি স্পটগুলো হলো শহরের চালহাটি, চামড়াগুদাম ও ডাকবাংলা এলাকা। এ তিন স্পট থেকে খুচরা স্পটে চোলাই মদ চলে যায়। খুচরা স্পটগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো হাতিখানা ক্যাম্প, রেললাইন, মিস্ত্রিপাড়া, হরিজন কলোনি, মুন্সিপাড়া জোড়াপুকুর, ঘোড়াঘাট, মহিলা কলেজ রোড, ক্যান্ট পাবলিক স্কুল মোড়, কলাহাটি, পুলিশ লাইন মোড়, সখিনাপাড়া, মুন্সিপাড়া সুইপার কলোনি, কাজীপাড়া, সুরকি মিল এলাকা। মাদক ব্যবসায়ীরা হলো দেলোয়ার, উত্তম চন্দ্র, সাদ্দাম বাবুর্চি, মো. অ্যাপোলো, শামীম, সিমলা, ইল্লা, আশরাফ কুলি, শহিদ, কালা, মুরাদ, ফিরোজ, পাপ্পু, রাজু, মানিক, কালু, জাহিদ, আসলাম চটপটিওয়ালা, নবী হোসেন চটপটিওয়ালা ও মো. কালা। তবে তাদের সঙ্গে কথা বললে সবাই অভিযোগ অস্বীকার করে। পরিচয় গোপন রেখে কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ীর সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, তারা পাশের দিনাজপুরের পার্বতীপুর, দশমাইল ও ভূষিরবন্দর এলাকায় বসবাসরত আদিবাসীদের দিয়ে টাকার বিনিময়ে চোলাই মদ তৈরি করে সৈয়দপুর শহরে নিয়ে আসে। বিশেষ করে পাটোয়ারীপাড়া হয়ে হঠাৎ বস্তি দিয়ে চোলাই মদ প্রতিদিন আসছে।

সর্বশেষ খবর