রবিবার, ২৩ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

থমকে গেছে বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ নির্মাণকাজ

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ প্রকল্পের কাজ হঠাৎ থমকে গেছে। চার মাস ধরে শুধু সম্ভবতা যাচাই কাজেই সীমাবদ্ধ রয়েছে প্রকল্পটি। হয়নি ভূমি অধিগ্রহণও। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাস্তবায়নে ধীরগতির কারণে এ প্রকল্পে অতিরিক্ত টাকা গুনতে হবে সরকারকে। ২০১৮ সালে অনুমোদন মেলে বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ প্রকল্পের। বাস্তবায়নের সময় ধরা হয়েছিল ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত কিন্তু এখনো কাজই শুরু হয়নি। সংশ্লিষ্ট এলাকায় জমি অধিগ্রহণের নোটিস পর্যন্ত করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। দেরিতে প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ায় নির্মাণের খরচও বেড়ে যাবে। যেসব জমি অধিগ্রহণ করা হবে তার দাম আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নিলুফা ইয়াসমিন জানান, রেললাইনের অধিগ্রহণ করা জমির মধ্যে বগুড়া অংশে ৪৭৯ দশমিক ১৫ আর সিরাজগঞ্জ অংশে ৪৬০ একর রয়েছে। প্রকল্পের পক্ষ থেকে জরিপ চালানো হলেও সেটি জেলা প্রশাসনকে নিয়ে করা হয়নি। ফলে এখন দুই জেলার প্রশাসনের পক্ষ থেকে সম্ভবতা যাচাই চলছে। বগুড়া রেলওয়ে কর্মকর্তারা জানান, ২০২৩ সালের মধ্যে বাস্তবায়নের কথা থাকলেও, তা এখন আর সম্ভব নয়। চলতি বছর ৮৬ দশমিক ৫১ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ রেলপথের ভূমি অধিগ্রহণ শুরু করাই চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। প্রকল্পের ভারতীয় পরামর্শক দলের বিস্তারিত সমীক্ষা, নির্মাণাধীন রেলপথ, রেলসেতু, রেলস্টেশন, সিগন্যাল এবং অন্য সব স্থাপনার নকশার কাজ শেষ হয়েছে অনেক আগেই। বগুড়া ও সিরাজগঞ্জ জেলার মধ্যে যোগাযোগ সহজ করতে বাংলাদেশ রেলওয়ের ওয়েস্ট জোন এ রুটে ডুয়েল গেজ রেললাইন স্থাপন করছে। এ রেলপথে মোট ৯টি স্টেশন করা হবে। এর মধ্যে এম মনসুর আলী স্টেশনে করা হবে তিনটি জংশন। প্রকল্প পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, নতুন রেল রুটের জন্য দুই জেলার ৯৬০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হবে। ইতোমধ্যে এ প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণ বাবদ ১ হাজার ৯২১ কোটি টাকা বরাদ্দ মিলেছে। মাঠ জরিপ শেষ হলে নোটিস করার পর টাকা দেওয়া শুরু হবে। বগুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সহসভাপতি মাফুজুল ইসলাম রাজ জানান, প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে উত্তরবঙ্গের ১১ জেলার মানুষের ট্রেনে যাতায়াতে ভোগান্তি কমবে। এ ছাড়া সিরাজগঞ্জ থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত আরও তিন কিলোমিটার রেলপথ তৈরি করায় এদিকের ট্রেনগুলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু পার হয়ে সারা দেশের সঙ্গে চলাচল করতে পারবে। বগুড়া জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম জানান, এ রেলপথ বগুড়া ও সিরাজগঞ্জবাসীর স্বপ্নের প্রকল্প। জেলা প্রশাসন থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। প্রকল্প পরিচালক মনিরুল ইসলাম ফিরোজ জানান, জমি অধিগ্রহণসহ প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর ২০২৪ সালে রেললাইন স্থাপন কাজ শুরু হতে পারে।

সর্বশেষ খবর