দীর্ঘ ১০ বছর ধরে দিনাজপুরের খানসামায় গোয়ালডিহি নলবাড়ী বিল থেকে দুবলিয়া গ্রাম পর্যন্ত প্রায় ৬-৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যে জলাবদ্ধতায় ২ হাজার একর জমি অনাবাদি হয়ে থাকত। সমস্যাটি সংশ্লিষ্টদের জানানোর পরও কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় কৃষকদের সমর্থন নিয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সমস্যা সমাধানে এগিয়ে এসেছে। এতে খুশি কৃষকরা এবং বাড়বে ফসলের উৎপাদন। জনগণের ভোগান্তি লাঘবে এই সমস্যা নিরসনে অনাবাদি জমি চাষের আওতায় আনতে ক্যানেলের কাজ শুরু করা হয়েছে বলে জানান গোয়ালডিহি ইউপি চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন লিটন। গত সোমবার বিকালে গোয়ালডিহি ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে যোতরঘু এলাকায় ক্যানেল সংস্কার কাজ উদ্বোধন করেন ইউপি চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন লিটন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও ওই এলাকার কৃষকরা। জানা যায়, আবর্জনা ও কচুরিপানায় ভরাট হয়ে বর্ষাকালে পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে যায় নলবাড়ী বিল থেকে দুবলিয়া গ্রাম পর্যন্ত প্রায় ৬-৭ কিলোমিটার এলাকা। এতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে প্রায় দশ বছর ধরে ২ হাজার একর জমি বর্ষাকালে জমি অনাবাদি হয়ে পড়ে থাকে। ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে কৃষক সমাবেশের পর ৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ১৫ ফিট প্রস্থ করে ক্যানেল খননের পরিকল্পনা করা হয়। এতে জলাবদ্ধতা নিরসনের মাধ্যমে ওই এলাকার কৃষি জমিগুলো চাষাবাদের উপযোগী হবে। স্থানীয় কৃষক সুবল রায় বলেন, ক্যানেলের আশপাশে আমার প্রায় পাঁচ একর জমি আছে। দশ বছর ধরে বর্ষা এলেই জলাবদ্ধতা তৈরি হয়ে ক্যানেলের দুই পাশে শত শত একর জমি অনাবাদি থেকে যেত। যার ফলে ওই মৌসুমে আমাদের কষ্টে দিনযাপন করতে হতো। ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে ক্যানেল সংস্কার হলে আবারও চাষাবাদ করতে পারব ভেবেই আনন্দ লাগছে। এ জন্য কৃষকরা ইউনিয়ন পরিষদকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। একই এলাকার কৃষক জাহিদুল ইসলাম জানান, কয়েক বছর ধরে জলাবদ্ধতায় বর্ষা মৌসুমে চাষাবাদ করতে পারি না। এতে অর্থনৈতিকভাবে কৃষকরা ক্ষতির মুখে পড়ে। এখন খাল সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়ায় জলাবদ্ধতা হতে মুক্তি পাওয়ার সঙ্গে আবারও চাষাবাদ করতে পারব।

ইউপি সদস্য নূর ইসলাম বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার পরও কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে ক্যানেল সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। এতে এই অঞ্চলের মানুষের চোখেমুখে স্বস্তির নিঃশ্বাস দেখা গেছে। আশা করছি তারা এই মৌসুমেই চাষাবাদ করতে পারবেন। গোয়ালডিহি ইউপি চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন লিটন বলেন, ওই এলাকায় জলাবদ্ধতা একটি অভিশাপস্বরূপ। দীর্ঘদিন ধরে এ জলাবদ্ধতায় কৃষকদের দুঃখ-দুর্দশার কথা উপলব্ধি করে খাল সংস্কার জরুরি মনে করি। জনগণের ভোগান্তি লাঘবে দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করে যাচ্ছি কিন্তু ঊর্ধ্বতন কারও সাড়া না পাওয়ায় ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে ক্যানেল সংস্কার কাজ শুরু করেছি। এই কাজ সফল করতে ক্যানেলের পার্শ্ববর্তী জমির মালিক ও সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরের সহযোগিতা কামনা করছি।