বুধবার, ২৬ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

নদীভাঙনে উৎকণ্ঠায় পদ্মাপাড়ের মানুষ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

নদীভাঙনে উৎকণ্ঠায় পদ্মাপাড়ের মানুষ

চাঁপাইনবাবগঞ্জে সারা বছর পদ্মা নদীতে ভাঙন আতঙ্ক থাকলেও সম্প্রতি আগ্রাসী পদ্মার ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। এতে ঝুঁকিতে রয়েছে হাজার হাজার হেক্টর আবাদি জমিসহ সরকারি স্থাপনা ও নদী তীরবর্তী হাজারও ঘরবাড়ি। স্থানীয়রা বলছেন, উজানের ঢল আর বর্ষণের কারণে বাড়ছে পদ্মা নদীর পানি। ফলে দিন দিন আগ্রাসী হয়ে উঠছে পদ্মা। দীর্ঘ এক দশকে সরকারি হিসেবে ভিটামাটি হারিয়েছে হাজার খানেক পদ্মা পাড়ের মানুষ। স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় প্রতি বছর নদীভাঙনের কবলে পানিতে মিশে যাচ্ছে আবাদি জমিসহ সরকারি স্থাপনা ও নদী তীরবর্তী হাজারও ঘরবাড়ি। জানা গেছে, সম্প্রতি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের চরপাঁকা ঈদগাহ থেকে সদর উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের ছাব্বিশ রশিয়া পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নদীভাঙন শুরু হয়েছে। এতে প্রায় ৪০ হাজার পদ্মাপাড়ের মানুষ নদীভাঙন আতঙ্কে দিনপার করছেন। ইতোমধ্যে চরপাঁকার তেররশিয়া গ্রামের শতাধিক মানুষ নদীভাঙনের কবলে ভিটামাটি হারিয়ে বিশ রশিয়ার নামোচর এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন। স্থানীয়রা বলছেন, নদীভাঙনের হুমকিতে রয়েছে সদর উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়ন পরিষদ, কমিউনিটি ক্লিনিক, দ্বিতীয় তলা বিশিষ্ট আশ্রয়ণ কেন্দ্র, দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নারায়ণপুর এম এ উচ্চবিদ্যালয়, নারায়ণপুরের বাতাস মোড় বাজারসহ কয়েক হাজার কৃষকের আবাদি জমি ও প্রায় ৫ হাজার পদ্মাপাড়ে বসরবাসকারী মানুষের ঘরবাড়ি। অন্যদিকে শিবগঞ্জ উপজেলার দুর্লভপুর ইউনিয়নের নামো জগন্নাথপুর এলাকার পন্ডিতপাড়া থেকে একই এলাকার দোভাগী পর্যন্ত ভাঙন শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নদীভাঙনে বিলিন হয়েছে কয়েক শ বিঘা ফসলি জমি। এ ছাড়া নদীভাঙনের ঝুঁকিতে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দ্বিতীয় তলা ভবন বিশিষ্ট একটি মসজিদ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, চলতি বছর নদীভাঙনে এসব এলাকার ৪০টি বাড়ির ভিটামাটি নদীতে বিলিন হয়েছে এবং ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে আরও তিন গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। সাদ্দাম আলী নামে পদ্মা পাড়ের এক বাসিন্দা জানান, পদ্মা নদীতে পানি বাড়লে এবং কমলে নদীভাঙনের সৃষ্টি হয়। বর্তমানে উজানের ঢল আর বর্ষার কারণে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সদর উপজেলার নারায়ণপুর ও শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকায় ভাঙন শুরু হয়েছে। কিন্তু প্রতি বছরই এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হলেও স্থায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হয় না নদীভাঙন রোধে। তিনি আরও বলেন, অস্থায়ীভাবে জিও ব্যাগ-জিও টিউব ব্যবহার করে নদীভাঙন রোধ করার চেষ্টা করে পানি উন্নয়ন বোর্ড কিন্তু তাতে কোনো কাজই হয় না।

 তাই পদ্মা পাড়ের হাজার হাজার মানুষের দাবি পদ্মা নদীতে ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হোক। এ প্রসঙ্গে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. ময়েজ উদ্দিন জানান, নদীভাঙন প্রতিরোধে প্রায় ৯ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা অর্থমন্ত্রণালয়ে এ প্রকল্পের কাগজপত্র সাবমিট (দাখিল) করেছেন। কিন্তু প্রস্তাবিত প্রকল্পটি এখনো পাস (অনুমোদন) হয়নি।

সর্বশেষ খবর