শিরোনাম
বুধবার, ২৬ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

বৃষ্টির অভাবে আমনের মাঠ ফেটে চৌচির

বাবুল আখতার রানা, নওগাঁ

বৃষ্টির অভাবে আমনের মাঠ ফেটে চৌচির

বাংলা দিনপঞ্জির হিসাবে এখন চলছে শ্রাবণ মাস। সাধারণত আষাঢ়-শ্রাবণেই ভারী মৌসুমি বৃষ্টিপাত হয়। বর্ষা যাই যাই করলেও ধান উৎপাদনে সমৃদ্ধ জেলা হিসেবে পরিচিত নওগাঁয় স্বাভাবিক বৃষ্টির দেখা নেই। আমন আবাদের জন্য জমি প্রস্তুত ও জমিতে লাগানো চারা বাঁচাতে এখন কৃষকদের ভরসা ভূগর্ভস্থ পানি। সেচনির্ভর আমন চাষে খরচ বাড়ছে কৃষকের। জেলায় চলতি মৌসুমে ১ লাখ ৯৬ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ২০ শতাংশ জমিতে ধানের চারা লাগানো সম্পন্ন হয়েছে। সেচের জন্য মাঠে মাঠে ৪ হাজার ৮৬৮টি গভীর নলকূপ, ৪৮ হাজার ৭৯টি অভীর নলকূপ ও ২২২৭টি এলএলপি সেচযন্ত্র রয়েছে। সব মিলিয়ে জেলায় ৫৫ হাজার ১৭৪টি সেচযন্ত্র রয়েছে। এর মধ্যে ১৭ হাজার ৪৯৫টি বিদ্যুৎচালিত সেচযন্ত্র। বাকি ৩৭ হাজার ৬৭৯টি সেচযন্ত্র ডিজেল চালিত। খরা মোকাবিলায় বিদ্যুৎ ও ডিজেলচালিত সেচযন্ত্রের প্রায় সবগুলোই চালু রয়েছে। জানা গেছে, জেলার ১১ উপজেলার কমবেশি সব এলাকাতেই এবার খরার কবলে পড়েছে আমন। এর মধ্যে পত্নীতলা, মহাদেবপুর, সাপাহার, পোরশা ও নিয়ামতপুর উপজেলার অবস্থা বেশি খারাপ। বৃষ্টিপাত না হওয়ায় মৌসুমের শুরু থেকেই কৃষকরা গভীর-অগভীর সেচযন্ত্র চালু করে আমনের চারা লাগাচ্ছেন। এদিকে লোডশেডিংয়ের কারণে সেচকাজও কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। সঠিক সময়ে জমিতে সেচ দিতে না পারায় আমনের খেত ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। কৃষকরা জানান, এখন এক বিঘা জমিতে বিদ্যুৎ ও ডিজেলচালিত সেচযন্ত্র দিয়ে সেচ দিতে বর্তমানে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা পর্যন্ত খরচ পড়ছে। আমনের চারা লাগানোর জন্য জমি প্রস্তুত ও খরার কবলে পড়া আমনের চারা বাঁচাতে ইতোমধ্যে কমপক্ষে দুবার সেচ দিতে হয়েছে। এই মৌসুমে এভাবে অনিয়মিত বৃষ্টিপাত চললে কমপক্ষে আরও ছয়বার সেচ দিতে হবে। সেই হিসাবে জেলার ১ লাখ ৯৬ হাজার হেক্টর আমনের ফসল রক্ষায় এবার সেচের খরচ বাবদ ব্যয় হবে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। জুনের শেষ সপ্তাহ ও জুলাইয়ের প্রথম চার-পাঁচ দিন প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টি হয়েছিল। মাঠের অনেক জমিতে পানিও জমে গিয়েছিল। কিন্তু তখন জমি প্রস্তুত না হওয়ায় ও বীজতলার চারার বয়স কম থাকায় কৃষক ধানের চারা লাগাতে পারেননি। সাধারণত জুলাইয়ের এক-দুই সপ্তাহ পর থেকে আগস্টের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত আমনের চারা লাগানোর উপযুক্ত সময়। এখন বৃষ্টির দরকার।

সর্বশেষ খবর