রাঙামাটিতে দ্রুত ছড়াচ্ছে ম্যালেরিয়া রোগ। একই সঙ্গে চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গুও। এরই মধ্যে জেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৪৫ জন। আর ম্যালেরিয়া রোগী ২ হাজার ছুঁই ছুঁই। এতে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বেড়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। জেলা সদরে ম্যালেরিয়া রোগী তেমন না থাকলেও উপজেলাগুলোতে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে ম্যালেরিয়া রোগীর চিকিৎসায় বেসরকারি উদ্যোগে গঠন করা হয়েছে একাধিক মেডিকেল টিম। এনজিও সংস্থা ব্র্যাক সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের সাত মাসে রাঙামাটিতে ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৮৫২ জন। এ সংখ্যা এখনো বাড়ছে। জেলায় ম্যালেরিয়ার আক্রান্ত জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে সীমান্তবর্তী বাঘাইছড়ি, বরকল, বিলাইছড়ি ও জুড়াছড়ি উপজেলাকে। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে এ চারটি উপজেলাকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে গঠন করা হয়েছে মেডিকেল টিম। একই সঙ্গে ম্যালেরিয়া রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে কাজ করছে বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক। রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডা. সৈকত আকবর জানান, প্রতি বছর চার মাস (মে, জুন, জুলাই ও আগস্ট) পার্বত্যাঞ্চলে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বাড়ে। কারণ বর্ষায় ম্যালেরিয়ার জিবাণুবাহী মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পায়। এ ছাড়া পাহাড়ি অঞ্চলে জঙ্গল ও ঝোপঝাড়ের কারণে মশা সহজে মানুষকে আক্রমণ করে। এবার ম্যালেরিয়ার সঙ্গে যোগ হয়েছে ডেঙ্গুও। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০০৮ সালে তিন পার্বত্য জেলা (রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে) ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি চালুর পর ২০১৩ সাল পর্যন্ত এ রোগ নিয়ন্ত্রণে ছিল। ২০১৪ সালের পর ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ হারায় পাহাড়ে। কেন পার্বত্যাঞ্চলে ম্যালেরিয়ার রোগ বাড়ছে- এমন প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারেনি জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। রাঙামাটি ব্র্যাকের জেলা সমন্বয়কারী হাবিবুর রহমান জানান, এখানকার ১০ উপজেলায় ৩৫টি কার্যালয় আছে ম্যালেরিয়াবিষয়ক কাজ করার জন্য। এসব কার্যলয়ে ১ হাজার ৬১০ স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন। তারা ম্যালেরিয়াপ্রবণ এলাকায় সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। শুধু জেলা বা উপজেলায় নয়, ইউনিয়নেও ব্র্যাক স্বাস্থ্য কর্মীরা ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন।