মঙ্গলবার, ১ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুল ভাতা বন্ধ মুক্তিযোদ্ধার

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

ঝিনাইদহের শৈলকুপায় জাতীয় পরিচয়পত্রে নামের ভুল থাকার কারণে এক মুক্তিযোদ্ধার ২ বছর ধরে ভাতা বন্ধ রয়েছে। ২ বছর ভাতা না পাওয়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন ওই মুক্তিযোদ্ধা। জানা যায়, উপজেলার কামারিয়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আনন্দ মোহন বিশ্বাস ১৯৯৬ সাল থেকে দীর্ঘ ২৫ বছর মুক্তিযোদ্ধার ভাতা পেয়ে আসছিলেন। ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে হঠাৎ তার ভাতা বন্ধ হয়ে যায়। উপজেলা সমাজ সেবা দফতরে ভাতা বন্ধের কারণ জানতে চাইলে তাকে জানানো হয় যে তার জাতীয় পরিচয়পত্রে নামের ভুল রয়েছে। সে জন্য ভাতা প্রদান বন্ধ করা হয়েছে। এরপর জেলা ও উপজেলা নির্বাচন অফিসে ধরনা দিয়েও আজ অবধি পুনরায় তার ভাতা উত্তোলনের কোনো ব্যবস্থা করতে পরেননি। মুক্তিযোদ্ধা আনন্দ মোহন বিশ্বাস জানান যে, ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ডাকে তিনি ভারতে যান ও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশে ফিরে যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন। বাংলাদেশ গেজেটে তার মুক্তি বার্তা নং ৪০৯০৩০১৯৮ এবং বেসামরিক গেজেট নং ১৩৯৮। তিনি ১৯৯৬ সাল থেকে নিয়মিত ৩০০ টাকা করে ভাতা পাচ্ছিলেন।

 পরবর্তীতে ভাতা বেড়ে ১০,০০০ টাকা করা হয়। সরকার প্রদত্ত এ ভাতা গ্রহণ করে কোনোমতে তিনি স্ত্রী সন্তান নিয়ে দিনাতিপাত করে আসছিলেন। গত ২ বছর যাবৎ কোনো ভাতা না পওয়ায় বৃদ্ধ বয়সে তাকে মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে। তিনি আরও জানান যে,ছোট বেলায় তিনি পার্শ¦বর্তী চর-চাগদা গ্রামে মামার বাড়িতে মানুষ হন। মামা-মামি তাকে আনন্দ মোহন বিশ্বাস নামে ডাকতেন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি মামাবাড়ি থেকেই যুদ্ধে যোগ দেন। আনন্দ মোহন বিশ্বাস নামেই তিনি যুদ্ধে নাম লেখান। কিন্তু জাতীয় পরিচয়পত্রে বাবা-মায়ের প্রদত্ত নাম অজিদ কুমার বাড়ই পিং অশি^নী কুমার বাড়ই হওয়াতে তার ভাতা প্রদান বন্ধ করা হয়েছে। এব্যাপারে বিভিন্ন দফতরে দিনের পর দিন ঘুরেও  তিনি কোনো সুফল পাননি। তার সহযোদ্ধা ননী গোপাল বিশ্বাস, মোনোয়ারুল ইসলাম, ইবাদত হোসেন ও আবদুল কাদের জানান তিনি তাদের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং এক সঙ্গেই তারা ভাতাপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মোনোয়ার হোসেন মালিথা জানান মুক্তিযোদ্ধা আনন্দ মোহন বিশ্বাস একজন তালিকাভুক্ত প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা দীর্ঘ ২৫ বছর তিনি ভাতা পেয়ে আসছিলেন। গত ২ বছর তিনি ভাড়া না পাওয়ায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ইচ্ছা করলেই তার এ সমস্যা সমাধান করতে পারেন এ ব্যাপারে আমি নির্বাচন অফিসে কয়েকবার তাগাদা দিয়েছি কিন্তু কতৃপক্ষ অজ্ঞাত কারনে তার এ সমস্যার সমাধান করছে না। আমি আশা করি যথাযথ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দ্রুত আমলে নিয়ে সমাধান করবেন।

সর্বশেষ খবর