শনিবার, ৫ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় বদলে গেছে কুতুবদিয়া

কুতুবদিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় বদলে গেছে কুতুবদিয়া

উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় বদলে গেছে কক্সবাজারের কুতুবদিয়ার রূপ। বর্তমান সরকারের কল্যাণে এমন হয়েছে আমূল পরিবর্তন। জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন থেকে শুরু করে ডিজিটালাইজেশন, সবই সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়নমুখী পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে। বিগত ১০ বছরে দেশের উন্নয়নে বর্তমান সরকার নিরলসভাবে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। ফলে এখন স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত হয়েছে। ঠিক তেমনিভাবে কক্সবাজারের কুতুবদিয়ার উন্নয়নের কমতি নেই বললেই চলে। বর্তমান সরকারের আমলে যা হয়েছে, পূর্ববর্তী সরকারের আমলে তা হয়নি, এমনটা দাবি সচেতন মহলের। কুতুবদিয়ার মানুষ কখনো কল্পনাও করেনি জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুৎ পাবে। কুতুবদিয়া সৃষ্টিলগ্ন থেকে প্রায় ৩ লাখ মানুষ অন্ধকারে জীবনযাপন করত। সন্ধ্যা হলেই মানুষের দুর্ভোগের শেষ ছিল না। জেনারেটরের মাধ্যমে গুটিকয়েক দোকানে বিদ্যুৎ চললেও বাকিরা দোকান বন্ধ করে বাড়িতে চলে যেত, রাত কাটত হারিকেন আর মোমবাতি দিয়ে। কয়েক বছর আগে কোটি টাকা ব্যয় করে বায়ুবিদ্যুৎ স্থাপন করলেও তা সম্পূর্ণ টাকা অপচয় বললেই চলে; যা এক দিনের জন্যও পুরো বিদ্যুৎ দিতে পারেনি। অবশেষে স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর অবহেলিত কুতুবদিয়াকে প্রায় ৬ কিলোমিটার সাগরের তলদেশ দিয়ে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে জাতীয় প্রিডের বিদ্যুৎ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত এপ্রিলে প্রথমিকভাবে এ বিদ্যুৎ চালু হয়ে চলমান রয়েছে; যা উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কুতুবদিয়া মানুষের স্বপ্ন যেন বাস্তবে রূপ দিয়েছেন ‘শেখের বেটি হাসিনা’, এমনটা দাবি কুতুবদিয়ার জনসাধারণের। কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় গত ১০ বছরে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্প, অর্থনৈতিক জোন ব্যতীত অন্তত ১০ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন হয়েছে। উন্নয়ন প্রকল্প ছাড়াও লবণের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকরণ। বাতিঘর পুনর্নির্মাণ। গত ১০ বছরে উন্নয়নের ধারা তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বর্তমানে কুতুবদিয়া উপজেলায় ২ হাজার কোটি টাকার উন্নয়নমূলক কাজ চলমান। এর মধ্যে বেড়িবাঁধ নির্মাণে ৯৭ কোটি, আজম সড়ক পুনর্নির্মাণ, চারটি জেটি নির্মাণ ও ৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ১১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কাম সাইক্লোন সেন্টার নির্মাণকাজ অন্যতম। কুতুবদিয়া দ্বীপে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন বিগত কয়েক যুগের উন্নয়নের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। ফলে আশাবাদী হয়ে উঠেছেন দ্বীপ কুতুবদিয়ার সাধারণ মানুষ। কুতুবদিয়ার মহিলাদের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে কুতুবদিয়া মহিলা কলেজ।

কুতুবদিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে প্রকাশ, কুতুবদিয়া-মহেশখালী আসনের স্থানীয় এমপি কয়েক শ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দের মাধ্যমে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন ও সোলার প্যানেল স্থাপন করেন। এ ছাড়া কয়েকটি অর্থবছরে দুর্যোগ, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ের অধীনে দ্বীপের বিভিন্ন খালের ওপর ১৫টি সেতু নির্মিত হয়েছে, অর্থ বরাদ্দ ২ কোটি ৭৪ লাখ ৭৫ হাজার ৯০০ টাকা। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে কয়েক শ বান্ডিল ঢেউটিন বিতরণ করা হয়।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় (এলজিইডি) কুতুবদিয়া উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সূত্রে প্রকাশ, গত কয়েক বছরে এমপির বিশেষ বরাদ্দে তৃতীয় প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়নে কয়েকটি বিদ্যালয় পুনর্নির্মাণে ৬ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়-কাম ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। বিদ্যালয়বিহীন অনেক গ্রামে বিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্পের আওতায় কুতুবদিয়ায় বিদ্যালয় স্থাপন করেন। গ্রামীণ সড়ক ও হাটবাজার উন্নয়ন প্রকল্প ২৯৩০ মিটার উন্নয়নের অধীনেও অনেক টাকা ব্যয় করা হয়েছে। এদিকে কুতুবদিয়া মহেশখালীর এমপি আলহাজ আশেক উল্লাহ রফিক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানিয়েছেন, উন্নয়নই আমার রাজনীতি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পনা ও উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নই আমার প্রধান লক্ষ্য। একই সঙ্গে উন্নয়নের আওতায় এনেছেন কুতুবদিয়া উপজেলাকে। প্রধানমন্ত্রীর গৃহীত প্রকল্প সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হলে মহেশখালী ও কুতুবদিয়া উপজেলা হবে দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি। তিনি আরও বলেন, ১৯৯১ সালে ঘূর্ণিঝড়ের পর বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এসে বেড়িবাঁধ নির্মাণে এক মিটার ডাউন করে দিয়েছিলেন। তাই প্রতিনিয়ত জোয়ারের পানি প্রবেশ করে লোকালয়ে। আর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর কুতুবদিয়া সর্বপ্রথম সিসি ব্লক দিয়ে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করেন। আর বিএনপির নেতারা মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য মিথ্যা অপবাদ ছডায়। বর্তমানে লবণের দাম আকাশচুম্বী, কৃষকের মুখে হাসি। যাতায়াতের সুব্যবস্থা, বেড়িবাঁধ নির্মাণ, বিভিন্ন স্কুল-মাদরাসায় ভবন নির্মাণ, প্রত্যেক স্কুল-মাদরাসায় আইটি সেক্টরসহ অসংখ্য উন্নয়নের কাজ করা হয়েছে। সুতরাং এ উন্নয়নকে আগামীতে আরও বেগবান রাখতে শেখ হাসিনাকে অবশ্যই অবশ্যই দরকার। সব মিলিয়ে প্রগতিশীল আধুনিক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে অতীতের পুঞ্জিভূত সমস্যা, চরম অব্যবস্থাপনা এবং বিশ্বমন্দার পটভূমিতে আওয়ামী লীগ সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে নির্বাচনী প্রতিশ্রতি বাস্তবায়নে যে সাফল্যের স্বাক্ষর রেখেছে তা প্রতিটি ক্ষেত্রেই দৃশ্যমান।

সর্বশেষ খবর