শনিবার, ১২ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকারিভাবে ধান সংগ্রহ বন্ধ

লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে শঙ্কা বিপাকে কৃষক

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকারিভাবে ধান সংগ্রহ বন্ধ

প্রতি মৌসুমে জেলা পর্যায়ে খাদ্য বিভাগের মাধ্যমে ধান-চাল সংগ্রহ করে সরকার। এবার বোরো মৌসুমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে প্রায় ৫৯ হাজান টন চাল এবং ৯ হাজার ১০০ টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে খাদ্য বিভাগ। হঠাৎ ধান কেনা বন্ধের সিদ্ধান্তে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। খাদ্য বিভাগের দাবি, ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পুরোপুরি অর্জিত না হলেও চালের কোনো সংকট হবে না। জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১ লাখ ১১ হাজার ৪০৫ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ধান আবাদ হয়। বাজারে বিক্রির পাশাপাশি অ্যাপে নিবন্ধিত কৃষকরা যাচাই-বাছাই শেষে সরকারি গুদামে ধান দিতে পারেন। গত ৭ মে থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ধান ও চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু করে খাদ্য বিভাগ। কৃষকের কাছ থেকে প্রতি মণ ১২০০ টাকা দরে ধান সংগ্রহ শুরু হয় যা ৩১ আগস্ট পর্যন্ত চলার কথা। প্রতি কৃষক ৭৫ মণ করে ধান দিতে পারবেন গুদামে। লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ১ আগস্ট পর্যন্ত চাল সংগ্রহ হয়েছে ৫২ হাজার ৮৯১ টন। লক্ষ্যমাত্রার বাইরে নতুন করে আরও ২০ হাজার টন চাল কেনার জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে খাদ্য বিভাগ থেকে। চাল সংগ্রহ স্বাভাবিক থাকলেও বিপত্তি বেধেছে ধানে। কোনো ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই ২৩ জুলাই থেকে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা বন্ধ করে দেয় জেলা খাদ্য বিভাগ। ২২ জুলাই পর্যন্ত সংগ্রহ হয়েছে ৫ হাজার ১১২ টন ধান। ধান বিক্রির আশায় প্রতিদিন খাদ্য গুদামগুলোতে ভিড় করছেন কৃষকরা। আল মামুন নামে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার এক কৃষক বলেন, লটারির মাধ্যমে খাদ্য বিভাগে ধান দেওয়ার জন্য নির্বাচিত হয়েছি। গুদামে ধান দেওয়ার জন্য শুকিয়ে বস্তায় ভরে রেখেছি। সাত দিন ধরে ঘুরেও গুদামে ধান দিতে পারছি না। বাজারে বেঁচতে গেলে প্রতি মণে অন্তত ১০০ টাকা লোকসান হবে। খাদ্য বিভাগ ধান কেনা বন্ধের কারণ স্পষ্ট না করলেও সূত্র জানান, জেলার মোট ১০টি খাদ্যগুদামে স্বাভাবিক ধারণক্ষমতা সাড়ে ২১ হাজার টন। অতিরিক্ত হিসেবে সংরক্ষণ করা যায় আরও সাড়ে ৪ হাজার টন। বর্তমানে গুদামগুলোতে মজুত আছে ২১ হাজার ৫৫৩ টন। ফলে গুদামে পর্যাপ্ত জায়গারও সংকট আছে। এ ছাড়া ভারত সরকার চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার ধানের বদলে চাল সংগ্রহের দিকেই বেশি নজর দিচ্ছে সরকার। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক আলমগীর কবীর বলেন, গুদামে জায়গার সংকট আছে ঠিক সেটি বলা যাবে না। আমরা একদিকে সংগ্রহ করছি, অন্যদিকে আবার গুদাম থেকে বিভিন্ন জায়গায় পাঠিয়ে দিচ্ছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় ধান কেনা বন্ধ রেখেছি।

সর্বশেষ খবর