শনিবার, ১২ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা
এম. মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

এমআরআই যন্ত্র কেনার নামে ১৮ কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা ঠিকাদার

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

এমআরআই যন্ত্র কেনার নামে ১৮ কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা ঠিকাদার

সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে যন্ত্রপাতি ক্রয়ে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। রোগীদের উন্নত চিকিৎসায় ব্যবহৃত ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স ইমেজিং (এমআরআই) নামের মেশিনটি কিনতে সরকারি ১৮ কোটি টাকা আগাম পরিশোধের পর ১৪ মাসে মেলেনি যন্ত্রটি। ঠিকাদার মাহফুজ হুদা সৈকত মালিকাধীন ‘গ্রিনট্রেড’কে বিধি-বহির্ভূতভাবে আগাম দেওয়ার পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মালিক টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়েছে। সিরাজগঞ্জের হিসাবরক্ষণ অফিসের চেকের মাধ্যমে গত বছরের জুনে ওই টাকা হাতিয়ে চম্পট দেন ঠিকাদার সৈকত। এ ছাড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রধান হিসাব নিয়ন্ত্রক শাখার যোগসাজশে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সরকারি বরাদ্দের আরও প্রায় ২৫ কোটি টাকা লোপাট করা হয় ‘সমন্বিত বাজেট ও হিসাব সংরক্ষণ ব্যবস্থা’ থেকে। অন্যদিকে হাসপাতালের বহু টাকা মূল্যের চিকিৎসা যন্ত্রপাতি ব্যবহার না করায় নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। এমনকি চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণের টাকারও আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ উঠেছে, শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওই যন্ত্র কেনাসহ সব অনিয়মে ঠিকাদার মাহফুজকে অনৈতিকভাবে সহযোগিতা করেছেন পিডি ডা. কৃষ্ণ কুমার পাল। জানা যায়, ২০১৫ সালে ৮৮২ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩০ দশমিক ৯০ একর জমির ওপর সিরাজগঞ্জ শহরের পাশেই শিয়ালকোল এলাকয় শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ এবং ৫০০ শয্যার হাসপাতাল নির্মাণ শুরু হয়। ২০২১ সালের ২ আগস্ট ঢাকা থেকে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালিক নবনির্মিত ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট এ হাসপাতালের পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম শুরুর আগেই বহির্বিভাগে চিকিৎসাসেবা উদ্বোধন করেন। এরই মধ্যে চিকিৎসাসেবার যন্ত্রপাতি ক্রয়ের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন দেওয়া হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়ে। রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ১৮ কোটি টাকার ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স ইমেজিং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করা হলেও ১৪ মাসে মেলেনি মেশিনটি। যন্ত্র সরবরাহ দূরের কথা, ১৪ মাসে ঠিকাদার মাহফুজকে খুঁজে পায়নি কেউই। অর্থলোপাটের হোতা মহসিন-মাহফুজ লাপাত্তা হলেও হিসাব নিয়ন্ত্রক শাখার কর্মকর্তা আফজাল-উল-বাশার, তৈয়বা আকতার, সিফাত-আরা-সাফিনা, অধ্যক্ষ সুরাইয়া আকতার ও মোহাম্মদ মহসিন মিজি সাময়িক বরখাস্ত হন। হাসপাতালের পরিচালক ডা. সায়ফুল ফেরদৌস মুহা. খায়রুল আতাতুর্ক জানান, এমআরআই যন্ত্র এখনো পাওয়া যায়নি। দুদক বিষয়টি তদন্ত করছে। যন্ত্রটি সিরাজগঞ্জ না আসায় উন্নত চিকিৎসা প্রাপ্তিতে বঞ্ছিত হচ্ছেন দূর-দূরান্তের সেবাপ্রত্যাশী রোগীরা।

সর্বশেষ খবর