রবিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

১২ বছর ধরে শিকলবন্দি

নাটোর প্রতিনিধি

১২ বছর ধরে শিকলবন্দি

১২ বছর ধরে ঘরে শিকলবন্দি অবস্থায় দিন কাটছে মানসিক ভারসাম্যহীন একরাম আলীর (৩২)। একরাম আলী নাটোর সদর উপজেলার তেবাড়িয়া ইউনিয়নের ভাটপাড়া গ্রামের ইব্রাহিম আলীর ছেলে। সরেজমিন দেখা যায়, স্যাঁতস্যাঁতে মাটির ঘরে শিকল বাঁধা অবস্থায় শুয়ে আছেন একরাম। পাশের ঘরে থাকেন তার বৃদ্ধ বাবা। কেউ ডাকলে সাড়া দেন শুকুর। হেসে কথার উত্তর দেন। পরিবার জানায়, ছোটবেলা থেকে অন্য শিশু-কিশোরের মতো স্বাভাবিক ছিল একরাম আলী। ২০০৯ সালে ১৮ বছর বয়সে হঠাৎ সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরিবারের লোকজন রাজশাহীতে চিকিৎসা করান। কিছুদিন সুস্থ থাকার পর এসএসসি পরীক্ষার আগে মানসিক ভারসাম্য হরায় সে। একরামকে পাবনা মানসিক হাসপাতালে নিয়ে যায় পরিবার। সেখানে দীর্ঘদিন চিকিৎসা করিয়েও উপকার না পেয়ে বাড়ি নিয়ে আসে। প্রায়ই সে বাড়ির আসবাপত্র ভাঙচুর ও লোকজনকে মারধর করতে থাকে। পরে এলাকার মানুষের পরামর্শে একরামকে ঘরে শিকল দিয়ে বন্দি করে রাখা হয়। ঘরবন্দি একরাম আলীকে তার মা দেখভাল করতেন। দুই বছর আগে মা মারা যান।

বাবা ইব্রাহীম আলী দিনমজুরের কাজ করেন। সন্ধ্যায় বাড়ি এসে নিজে রান্না করে সন্তানকে খাওয়ান। তেবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান ওমর আলী প্রধান বলেন, একরাম আলী কিশোর অবস্থা থেকে মানসিক ভারসাম্যহীন। সে ছাড়া পেলে অস্বাভাবিক আচরণ করে। এ কারণে পরিবার ঘরে বন্দি করে তাকে দেখাশোনা করেন। তাকে ও তার পরিবারকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সরকারের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়। গতকাল একরামকে দেখতে যান সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সারমিনা সাত্তার। তিনি বলেন, আমার মনে হয়েছে, তাকে চিকিৎসা দিলে কিছুটা সুস্থ হতে পারে। সবাই মিলে একরাম আলীর পরিবারের পাশে দাঁড়ালে তারা কিছুটা হলেও উপকৃত হবে। উপজেলা প্রশাসন তাকে সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে পাশে থাকবে।

সর্বশেষ খবর