সোমবার, ১৪ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

অপহরণের দায়ে একজনের মৃত্যুদন্ড

নাটোর প্রতিনিধি

নাটোরের লালপুরে স্কুলছাত্রীকে অপহরণ ও ধর্ষণের দায়ে একজনের মৃত্যুদন্ড ও অপর জনকে আমৃত্যু কারাদন্ড দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। গতকাল দুপুরে ট্রাইব্যুনালের বিচারক (দায়রা জজ) মুহাম্মদ আবদুর রহিম এই দন্ডাদেশ দেন। একই সঙ্গে আসামিদের ৩০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। জরিমানার টাকা ভুক্তভোগী নারী পাবেন। দন্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- নাটোরের লালপুর উপজেলার পোকন্দা গ্রামের মো. সুমন (২৬) ও সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার ধানকুন্টি গ্রামের রফিকুল ইসলাম (৪৩)। গতকাল দুপুরে আদালতে দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে অপহরণ করে ধর্ষণ করার মামলায় রায় ঘোষণা করা হয়। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বিচারক রায়ের সংক্ষিপ্ত অংশ পড়ে শোনান।

তিনি আসামি মো. সুমনকে অপহরণ ও ধর্ষণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে তাকে মৃত্যুদন্ড ও ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। একই সময় বিচারক রফিকুল ইসলামকে ভুক্তভোগীকে ধর্ষণে সহযোগিতার দায়ে আমৃত্যু সশ্রম কারাদন্ড ও ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। রায় ঘোষণার পর আসামিদের কড়া পাহারায় জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। মামলার বিবরণে জানা যায়, বাদীর মেয়ে (১৫) দশম শ্রেণিতে পড়ালেখা করত। তার মেয়ে নিজ ঘরে পড়ার সময় ২০১৬ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আসামি মো. সুমন একটি সাদা রঙের মাইক্রোবাস নিয়ে বাড়ির সামনে আসে। সে এবং তার সঙ্গে থাকা লোকজন বাদীর বাড়িতে ঢুকে জোরপূর্বক তার মেয়েকে অপহরণ করে মাইক্রোবাসে করে সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার ধানকুন্টি গ্রামের রফিকুল ইসলামের বাড়িতে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে মো. সুমনসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে লালপুর থানায় মামলা করেন। তদন্ত কর্মকর্তা লালপুর থানার উপ-পরিদর্শক আসাদুজ্জামান ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করেন এবং আদালতে জবানবন্দি দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। একই সঙ্গে তার ডাক্তারি পরীক্ষা করান। পরীক্ষা শেষে ডাক্তার ওই ছাত্রীকে নির্যাতনসহ ধর্ষণ করার প্রমাণ পাওয়া যায় বলে মতামত দেন। তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা ২০১৬ সালের ১০ মে ছয় আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। অভিযোগ গঠনের সময় আদালত আসামি মো. সুমন ও রফিকুল ইসলাম ছাড়া বাকি আসামিদের অব্যাহতি দেন। আদালত মোট ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। সাক্ষ্য প্রমাণে আসামিরা দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় গতকাল আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে দন্ড ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি আনিছুর রহমান দন্ডাদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অপ্রাপ্ত বয়স্ক একজন স্কুলছাত্রীকে প্রকাশ্যে অপহরণ করে বাড়িতে আটকে রেখে ধর্ষণ করার ঘটনা ঘটেছিল। সাক্ষ্য প্রমাণে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় আসামিদের সাজা দিয়েছেন আদালত। এ রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবে রায় ঘোষণার পর আসামিরা রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন।

সর্বশেষ খবর