মঙ্গলবার, ২২ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

ঝুঁকিতে তিস্তার ভাঙন প্রতিরক্ষা বাঁধ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

ঝুঁকিতে তিস্তার ভাঙন প্রতিরক্ষা বাঁধ

চলতি মৌসুমে তিস্তা পাড়ে কয়েকদফা বন্যা হয়ে গেছে। যে কোনো সময় আবারও বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। এরই মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে তিস্তার ভাঙন প্রতিরক্ষা বাঁধের কয়েকটি পয়েন্ট। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বলছে, এবার বন্যা মারাত্মক আকার ধারণ না করায় দু-একটি পয়েন্ট বাদে বাঁধের খুব একটা ঝুঁকি নেই। স্থানীয়দের দাবি, রংপুর শহরসহ জেলার বিভিন্ন এলাকা তিস্তার কবল থেকে বাঁচাতে  দ্রুত বাঁধ সংস্কার করা হোক। পাউবো সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৪ সালে নীলফামারীর জলঢাকা থেকে রংপুরের কাউনিয়ায় তিস্তা রেল সেতু পর্যন্ত ৪৬ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ তিস্তার ডান তীর বাঁধ নির্মাণ করা হয়। এ ছাড়া তিস্তা রেল সেতু থেকে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ পর্যন্ত আরও ২১ কিলোমিটার বাঁধ রয়েছে। ১২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৯ সালে সবশেষ বাঁধ সংস্কার করা হয়েছে। বাম তীরে বাঁধ রয়েছে তিস্তা ব্যারাজ থেকে লালমনিরহাট হয়ে কুড়িগ্রামের উলিপুর পর্যন্ত মোট ১২০ কিলোমিটার। ডান তীরের গঙ্গাচড়ার মর্ণেয়া থেকে নোহালী পর্যন্ত ১৯ কিলোমিটার বাঁধের চিলাপাক এলাবা ভাওনের মুখে পড়লে জিও ব্যাগ ফেলে রক্ষার চেষ্টা করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া বিনবিনা, ছালাপাকসহ কয়েকটি পয়েন্ট মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। বড় ধরনের বন্যা হলে বাঁধ নদীতে চলে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। নদী ভাঙনের শিকার মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে এসব বাঁধে বসবাস করছেন। অনেক স্থানে বাঁধ কেটে সমতল করে স্থানীয়রা দোকান-পাট ও বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে তুলেছেন। দীর্ঘদিন অরক্ষিত থাকায় জলঢাকার শৌলমারী ও নোহালী সীমান্ত থেকে রংপুরের কাউনিয়ার নীচপাড়া পর্যন্ত বাঁধের বেশিরভাগ চলে গেছে অবৈধ দখলদারের কবজায়। পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভিন্ন সময় উচ্ছেদ নোটিস দিয়েও কার্যকর করতে পারেনি। গঙ্গাচড়া ও কাউনিয়া উপজেলাকে তিস্তার ভাঙন থেকে রক্ষার জন্য বাঁধটি নির্মাণ করা হলেও দখলদারদের পাশাপাশি ১৯৮৮ সালের বন্যায় মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাঁধের প্রস্থ কমপক্ষে ১৪ ফুট থাকার কথা কিন্তু এখন অনেক স্থানেই তা নেই। কয়েকদিন আগের বন্যায় কোলকোন্দ ইউনিয়নের বিনবিনা এলাকায় বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছিল। বাঁধটি পুরোপুরি ধসে গেলে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি আবাদি জমি, বসতভিটা বিলীন হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। গত বছর বন্যার আগে স্থানীয়দের উদ্যোগে বাঁধের এ অংশ মেরামত করা হয়। এবার প্রায় ১০০ ফুটজুড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। পাউবো জরুরিভিত্তিতে বাঁধ রক্ষায় বালুর বস্তা ফেলছে। রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, এবার বড় ধরনের বন্যা না হওয়ায় বাঁধে তেমন ভাঙন দেখা দেয়নি। একটি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠায় সেখানে জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। আরও দু-একটি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। সেগুলো পানি উন্নয়ন বোর্ড তদারকি করছে।

সর্বশেষ খবর