বুধবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

দহগ্রামে এক পাশ ধসে পড়া সেতু দিয়েই চলাচল

লালমনিরহাট

দহগ্রামে এক পাশ ধসে পড়া সেতু দিয়েই চলাচল

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার চারদিকে সীমান্তঘেঁষা দহগ্রাম ইউনিয়ন। এ ইউনিয়নের মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে সাঁকোয়া নদী। চার বছর আগে বন্যায় ইউনিয়নের বঙ্গেরবাড়ী-নয়ারহাট গ্রামে সাঁকোয়া নদীর ওপর নির্মিত সেতুর এক পাশ ধসে যায়। এখনো সেই সেতু মেরামত করা হয়নি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে শিশুসহ সব বয়সী মানুষ। এদিকে ধসে পড়া সেতুর এক পাশে কাঠ ও বাঁশ দিয়ে সাঁকো তৈরি করা হয়েছে। এ সাঁকো দিয়ে সেতুর ওপর উঠতে হয়। ঝুঁকি নিয়ে ইউনিয়নের ৪০ হাজার মানুষ ওই সেতু দিয়ে চলাচল করছেন। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানায়, ১৯৯১-৯২ অর্থবছরে দহগ্রাম ইউনিয়নে সাঁকোয়া নদীর ওপর সেতু নির্মাণ করা হয়। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৪০ ফুট ও প্রস্থ ৭ ফুট। ২০১৯ সালে বন্যায় সেতুটির দক্ষিণ দিকে ১০ ফুট ধসে পড়ে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সেতুটির উত্তর দিকে উপজেলা সদরসহ দহগ্রাম ইউনিয়নের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সড়ক ও ইউপির কার্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ, কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বঙ্গেরবাড়ী বাজার, বিজিবি ক্যাম্প, গুচ্ছগ্রাম বাজারসহ অন্তত ২৫টি গ্রাম রয়েছে। আর দক্ষিণে নয়ারবাজার, কার্তিপাড়া, মুন্সিপাড়া, সৈয়দপাড়া, দুই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ১০টি গ্রাম রয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, সাঁকোয়া নদীতে বিধ্বস্ত সেতুটি কাত হয়ে আছে। সেতুটির দক্ষিণ পাশে মাটি সরে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এ গর্তের মধ্যে নড়বড়ে খুঁটির ওপর কাঠ ও বাঁশ দিয়ে সাঁকো তৈরি করা হয়েছে। সেটিও একটু কাত হয়ে আছে। ওই সাঁকো দিয়ে লোকজন চলাচল করছেন। পণ্যবোঝাই কোনো যানবাহন সেতু পার হতে পারে না। দহগ্রাম ইউনিয়নের কার্তিপাড়া গ্রামের দীলিপ মিয়া, হাসর আলীসহ কয়েকজন কৃষক বলেন, বিভিন্ন কৃষিপণ্য বিক্রির জন্য উপজেলা সদরের বাজারে নিতে হয়। কিন্তু এই ভাঙা পুলটার (সেতু) কারণে চার কিলোমিটার ঘুরে যেতে হয়। উপজেলার রসুলগঞ্জ হাটে নিয়ে যেতে অতিরিক্ত খরচ করতে হচ্ছে। সেতুর ওপর দিয়ে কোনো পণ্যবোঝাই গাড়ি পারাপার হয় না। এপার থেকে ওপারে নিতে হলে মাথায় করে নিয়ে যেতে হয়। এতে সময় ও পরিশ্রম বেশি লাগে। ভ্যানচালক আমিনুর রহমান (৫০) বলেন, ‘চার বছর ধরে এই সেতু ভাঙা আর বাঁশের পুলও ভাঙা, এটা দিয়া হামাক চলবার লাগচ্ছে। এখন এটি ভেঙে বড় পুল করা কথা কেউ ভাবচ্ছে না?’ দহগ্রাম ইউপির চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, এখানে জরুরি ভিত্তিতে একটি সেতু নির্মাণ করা দরকার। বিধ্বস্ত সেতু দিয়ে পারাপার হতে গিয়ে স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী, সাধারণ মানুষসহ ১০-১৫ জন পানিতে পড়ে আহত হয়েছেন। সেতু নির্মাণের জন্য এলজিইডিসহ উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় বারবার জানানো হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। পাটগ্রাম উপজেলা প্রকৌশলী মাহবুব-উল-আলম জানান, সেখানে ৫০ মিটার দৈর্ঘ্যরে একটি বড় সেতু নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে একটি প্রকল্পের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে অনুমোদন ও অর্থ বরাদ্দ পেলে সেতুটি নির্মাণ করা সম্ভব হবে।

সর্বশেষ খবর