রবিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

দুশ্চিন্তায় পানচাষিরা

অনাবৃষ্টিতে ফলন কম

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

বর্ষায় খাসিয়া পান উৎপাদনের ভরা মৌসুম। সাধারণত একটি গাছ থেকে অন্য সময়ে যে পরিমাণ পান তোলা হয় বর্ষা মৌসুমে সে গাছে দেড়-দুই গুণ বেশি পান পাওয়া যায়। এ বছর খরার প্রভাবে পান উৎপাদন প্রায় অর্ধেকে নেমেছে। যে পান তোলা হচ্ছে, তা-ও আকারে অনেক ছোট। অনাবৃষ্টির কারণে পান উৎপাদন স্বাভাবিক সময়ের মতো বাড়েনি। এতে পান চাষের ওপর নির্ভরশীল জেলার বড়লেখায় ১৯টি, কুলাউড়ায় ৩০টি, জুড়ীতে পাঁচটি, রাজনগরে একটি, শ্রীমঙ্গলে ১২টি ও কমলগঞ্জের সাতটি মিলিয়ে ছোট বড় প্রায় ৭৫টি আদিবাসী খাসিয়া পান পুঞ্জিতে বসবাসরতরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। খাসিয়া পানচাষিরা বলেন, পাহাড়ি টিলা ভূমিতে পর্যাপ্ত সেচ সুবিধা নেই। পান চাষ পুরোটাই প্রকৃতিনির্ভর। মৌসুমি বৃষ্টির ওপর চাষিদের নির্ভর করতে হয়। আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না তাদের। বৃষ্টি না হলে পান উৎপাদনে ক্ষতির মুখে পড়ে। এ বছর খাসিয়া পান উৎপাদন অনাবৃষ্টির কবলে পড়েছে। দীর্ঘ খরার কারণে সময় মতো পান গাছের পরিচর্যা করা সম্ভব হয়নি। এর প্রভাব পড়েছে উৎপাদনে। চক্রাকারে একটি পান গাছ থেকে এক থেকে দেড় মাস পরপর পান তোলা হয়। এবার সেটা সম্ভব হচ্ছে না। একটি পান গাছ থেকে পান তুলতে দুই থেকে আড়াই মাস পর্যন্ত বিরতি দিতে হবে। পান চাষিরা আরও বলেন, শুধু উৎপাদনই কমেনি, পান পাতার আকারও ছোট হচ্ছে। পানের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটছে না। বাজারে বড় পানের চাহিদা বেশি। বড় পান হলে যে দাম পাওয়া যেত, ছোট পানে সেই দাম পাওয়া যায় না। কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া খাসিয়া পুঞ্জির পানচাষি শামিম পামথেত বলেন, খরার কারণে সঠিক সময়ে গাছে পান আসেনি। এখন পানের ভরা মৌসুম। এখনো বৃষ্টি খুব কম হচ্ছে। বৃষ্টি না হলে পুরোপুরি পান তোলা ও পরিচর্যা করা যায় না। শ্রীমঙ্গলের পানচাষি রাজু মার্চিয়াং বলেন, এ মৌসুমে একটি পানজুমে (পান খেত) প্রতিদিন ১০-১৫ জন শ্রমিক কাজ করেন। শ্রমিকের খরচ তোলাই কঠিন হয়ে পড়ছে। খাসি সোশ্যাল কাউন্সিলের সভাপতি সুছিয়াং বলেন, অনাবৃষ্টিতে পান পরিচর্যায় দেরি হয়েছে। এতে উৎপাদন কমে প্রায় অর্ধেকে নেমেছে।

সর্বশেষ খবর