মঙ্গলবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

হাওরে বিপন্ন দেশি মাছ

পোনা নিধন চলছেই

জাকারিয়া চৌধুরী, হবিগঞ্জ

হাওরে বিপন্ন দেশি মাছ

হবিগঞ্জের বানিয়াচং, লাখাই ও আজমিরীগঞ্জ উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় রয়েছে হাওর। এখানে নিষিদ্ধ কারেন্ট জালের পাশাপাশি ভয়ংকর চায়না ‘ম্যাজিক জাল’ দিয়ে পোনা ও ডিমওয়ালা মাছ নিধন করছে জেলেরা। মাছের প্রজননকালে এভাবে মাছ শিকার চলছে। যা জলাশয়ে মাছ বৃদ্ধির পথে বাধা বলছেন স্থানীয়রা। তারা বলছেন, এমনিতেই দিন দিন দেশীয় প্রজাতির মাছ কমছে। তারপর যদি নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার করে পোনা ও ডিমওয়ালা মাছ নিধন করা হয় তা হলে আগামীতে জলাশয় দেশীয় মাছ শূন্য হয়ে যাবে। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, হাওরের পানি কমতে শুরু করায় এক শ্রেণির জেলে সহজেই মাছ শিকারের আশায় খাল-বিল নদনদী এবং হাওরের বিভিন্ন স্থানে নিষিদ্ধ কারেন্ট জালের ফাঁদ ও ভয়ংকর চায়না ‘ম্যাজিক জাল’ ব্যবহার করছেন। এসব জালের সূক্ষ্ম ফাঁস গলিয়ে অতি ছোট মাছও বের হতে পারে না। ধরা পড়ে ছোট-বড় সব মাছ। অবৈধ এ জালের ব্যবহার ব্যাপক বেড়েছে। বিশেষ করে প্রজনন মৌসুমে ডিমওয়ালা চিংড়ি, পুঁটি, টেংরা, কই, শিং, মাগুর, বোয়াল, শোল, টাকিসহ প্রাকৃতিক জলাশয়ের সব মাছ এই জালে নিধন হচ্ছে। এতে ক্রমেই মাছশূন্য হয়ে পড়ছে নদনদী, খাল-বিল। সেই সঙ্গে বৃদ্ধি পাচ্ছে দেশীয় মাছের দাম।  সরেজমিন লাখাই উপজেলার বিভিন্ন হাওর ঘুরে দেখা যায়, নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল আর চায়না ‘ম্যাজিক জাল’ই শুধু নয়, হাওরে বেড়জাল দিয়েও চলছে মাছের পোনা নিধনের মহোৎসব। বেড় জালের ফাঁস এতটাই সূক্ষ্ম যে ছোট ছোট রেণুও তাতে আটকা পড়ছে। ম্যাজিক জালে মাছের সঙ্গে আটকা পড়ছে কাঁকড়া, কুঁচিয়া, সাপ, ব্যাঙ, কচ্ছপ ও বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড়। অনেক স্থানে ‘চায়না দুয়ারি’ নামে পরিচিত এ জাল ব্যবহারকারীরা প্রথমে পানির নিচে তা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখে। কয়েক ঘণ্টা পর পর তা ওঠানো হয়। এতে পানিতে থাকা সব ধরনের মাছ আটকা পড়ে। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ ওয়াহিদুর রহমান মজুমদার বলেন, শুধু অভিযান চালিয়ে এসব বন্ধ করা যাবে না, জেলেদের এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ জালে মাছের পোনা আটকা পড়লে মারাও যায়। এসব জাল ব্যবহার দ্রুত বন্ধ না করলে মাছশূন্য হয়ে পড়তে পারে হাওর এলাকা। মাছ শিকারের নিত্যনতুন কৌশল রপ্ত করছেন জেলেরা। কিছু কিছু ভয়ংকর কৌশল প্রয়োগের ফলে হুমকির মুখে পড়ছে দেশীয় মাছ। এ থেকে উত্তরণে জেলা, উপজেলা প্রশাসনের পাশাপাশি মৎস্য বিভাগকে নজরদারি বাড়াতে হবে হাওরাঞ্চলে।

সর্বশেষ খবর