বৃহস্পতিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

১৮ বছর ধরে তালপাতায় হাতেখড়ি শিশুদের

শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট

১৮ বছর ধরে তালপাতায় হাতেখড়ি শিশুদের

দোয়াতের কালি আর তালপাতায় এক সময় শিক্ষাজীবন শুরু হতো শিশুদের। সময়ের সঙ্গে পরিবর্তন হয়েছে সেই ব্যবস্থার। এ যুগেও তালপাতায় হাতেখড়ির কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে বাগেরহাটের চিতলমারীর ‘শিশু শিক্ষা নিকেতন’ নামের পাঠশালা। ১৮ বছর ধরে এখানে তালপাতায় শিক্ষাজীবন শুরু করছে শিশুরা। পাঠশালাটিতে রয়েছে সুপেয় পানি, বিদ্যুৎ ও জলাবদ্ধতাসহ নানা সমস্যা। এসব সমস্যা সমাধানে প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন অভিভাবকরা।

চিতলমারী উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল দক্ষিণ ডুমুরিয়ায় শিশু শিক্ষা নিকেতন চালাচ্ছেন ৭৫ বছর বয়েসী পন্ডিত কালিপদ বাছাড়। গ্রামবাসীর সহায়তায় চলা এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিশুরা দোয়াতের কালি আর বাঁশের কঞ্চির কলম দিয়ে তালপাতায় লিখে শুরু করছে শিক্ষাজীবন। পাঠশালায় গেলে অর্ধশত শিশুর দেখা মেলে যারা তালপাতায় অক্ষর জ্ঞান চর্চা করছে। কালিপদ বাছাড় বলেন, তালপাতায় অক্ষর চর্চায় হাতের লেখা ভালো হয়। এখান থেকে শিশুরা প্রথম অক্ষরজ্ঞান লাভ করে। তারা স্বরবর্ণ, ব্যঞ্জন বর্ণ, বানান, যুক্তাক্ষর, শতকিয়া, নামতা, ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা নেয় এখানে। এ পাঠশালা থেকে ১৮ বছর ধরে শিশুদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাওয়ার উপযোগী করে গড়ে তুলছি। স্থানীয় অভিভাবক লক্ষ্মী রানি বলেন, আমাদের পাঠশালার শিক্ষক কালিপদ বাছাড় শিশুদের খুব ভালো পড়ান। তিনি হাতে ধরে তালপাতায় লেখা শিখান। আশপাশের প্রায় পাঁচ গ্রামের ৫০ জন শিশু এখানে পড়াশোনা করে। প্রতি শিক্ষার্থীর জন্য মাসে মাত্র ১৫০ টাকা নেন শিক্ষক কালিপদ বাছাড়। যা দিয়ে তালপাতা ও দোয়াত-কালিসহ পাঠশালার বিভিন্ন উপকরণ কেনেন তিনি। বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক খালিদ হোসেন বলেন, চিতলমারী উপজেলার ডুমুরিয়া দক্ষিণপাড়ায় একটি পাঠশালা রয়েছে। সেখানে এখনো পুরাতন আমলের তালপাতার শিক্ষাব্যবস্থা চালু আছে- যা আমাদের ইতিহাস-ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। শুনেছি পাঠশালাটিতে বিদ্যুৎ ও জলাবদ্ধতা বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। এগুলো সমাধানে দ্রুতই উদ্যোগ নেওয়া হবে।

 

সর্বশেষ খবর