বৃহস্পতিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

পাটের ফলনে খুশি, দামে নাখোশ

উৎপাদন খরচ ওঠা নিয়ে শঙ্কায় চাষিরা

খন্দকার একরামুল হক সম্রাট, কুড়িগ্রাম

পাটের ফলনে খুশি, দামে নাখোশ

বিক্রির জন্য নিয়ে আসা পাট। কুড়িগ্রামের যাত্রাপুর হাটের ছবি -বাংলাদেশ প্রতিদিন

কুড়িগ্রামে চলতি বছর পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। জেলার চাষিরা পাটের ফলনে খুশি হলেও কাক্সিক্ষত দাম না পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন। বিভিন্ন হাট-বাজারে পাট বিক্রি করতে এসে বিপাকে পড়েছেন কৃষক। বর্তমান বাজারে যে দরে পাট বিক্রি হচ্ছে তাতে লাভতো দূরের কথা আবাদ খরচ উঠানো নিয়েই দুশ্চিন্তায় আছেন তারা। মণপ্রতি পাট ১৬০০-১৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এমন দামের কারণে আগামী মৌসুমে পাট আবাদ করবেন না বলে জানান অনেকে। সরেজমিন জানা যায়, সদর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে যাত্রাপুর হাট। সপ্তাহে দুই দিন বসে এ হাট। দূর-দূরান্ত থেকে নৌকা, সাইকেল ও ঘোড়ার গাড়ি করে প্রতিদিন চাষিরা আসেন পাট বিক্রি করতে। কৃষক দাম ভালো পাওয়ার আশায় বাজারে এসে হতাশা প্রকাশ করেন বিক্রেতারা। পাঁচগাছী ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের কৃষক নুর ইসলাম বলেন, এক বিঘা জমিতে পাট চাষে অনেক খরচ হয়েছে। সার, পানি, কীটনাশক, আঁশ ছড়ানো মজুরি খরচসহ এক বিঘায় খরচ হয় ১৪-১৫ হাজার টাকা। ফলন হয়েছে মাত্র ৮-১০ মণ পাট। খরচ অনুপাতে পাটের আবাদে কোনো লাভ নেই। ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দাম না পেলে তিনি আর পাট চাষ করবেন না। অপর কৃষক মজিদ মিয়া বলেন, কয়েকদিন আগে যখন নতুন পাট নামে তখন দাম ভালো ছিল। এখন দাম নেই। এক বছর ধরে ভালো দাম পাচ্ছি না। পাটের আবাদে খরচ যেমন, তেমন লাভ না হলে আবাদ করি কী করে। চর ভগবতীপুরের পাট ব্যবসায়ী আসলাম মিয়া বলেন, আমি কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি পাট কিনি ও বেচি। মণপ্রতি ১৫০০ থেকে ১৬০০ কিনছি। যাত্রাপুর হাটে এসে আসল দামই ওঠে না। পরিবহন ও কুলি খরচ, হাটের খাজনা হিসাব করলে লাভই থাকে না। হাটের আরেক ব্যবসায়ী জাহেদুল ইসলাম বলেন, গত হাটে পাটের দাম মণপ্রতি ২২০০ থেকে ২৩০০ টাকা ছিল। এখন তা সর্বোচ্চ ১৮০০-১৯০০ টাকা। দাম না বাড়লে আমার লোকসানের মুখ দেখতে হবে। কুড়িগ্রাম জেলা মুখ্য পাট পরিদর্শক এ টি এম খায়রল হক বলেন, দুই সপ্তাহ আগে পাটের দাম ভালো ছিল, এখন কমেছে। কারণ অধিকাংশ ব্যবসায়ী কারখানায় পাট দিয়ে তাদের আগের পাওনা না পাওয়ায় হাত শূন্য। তাই নতুন করে পাট কেনার চাহিদা তাদের কমে গেছে।

সর্বশেষ খবর