শনিবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

স্টেশনে রাত কাটিয়ে ভোরে শ্রম বিক্রি

বোয়ালমারী প্রতিনিধি

স্টেশনে রাত কাটিয়ে ভোরে শ্রম বিক্রি

রেলস্টেশনে এভাবেই রাত কাটে কৃষিশ্রমিকদের

ফরিদপুরে কৃষিকাজের এখন ভরা মৌসুম হলেও রয়েছে শ্রমিক সংকট। এ সংকট অনেকটা পুষিয়ে দিচ্ছেন উত্তরবঙ্গের শ্রমিকরা। কাজের সন্ধানে উত্তরাঞ্চল থেকে শত শত কৃষি শ্রমিক দল বেঁধে আসেন ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে। সারা দিন কাজ শেষে রেল স্টেশনে রাত কাটে তাদের। ভোর হলে তারা আবার শ্রম বিক্রি করেন। জানা যায়, বছরের এ সময় উত্তরবঙ্গ তথা রাজশাহী, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে শত শত শ্রমিক আসেন বোয়ালমারীতে। রাজশাহী থেকে গোপালগঞ্জ পর্যন্ত চলাচল করে টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস। বোয়ালমারী থেকে সকাল সোয়া ৮টায় রাজশাহীর উদ্দেশে ট্রেনটি ছেড়ে যায়। আবার রাজশাহী থেকে ছেড়ে রাত সাড়ে ৮টায় বোয়ালমারী পৌঁছায়। টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেসে শত শত শ্রমিক কাজের সন্ধানে এ অঞ্চলে আসেন। তাদের সঙ্গে থাকে মশারি আর বিছানাপত্র। রেল স্টেশনেই বিছানা পেতে শুয়ে পড়েন তারা। ভোর হলে স্টেশনের পাশের চত্বরে বসে শ্রম বিক্রির হাট। সেখান থেকে বিভিন্ন স্থানের মানুষ এসে দিনমজুর বা টাকায় ঠিক করে কাজের জন্য নিয়ে যান। সারা দিন কাজ করে আবার আসেন রেল স্টেশনে। রাতে স্টেশনে থাকতে বাধা না থাকলেও সমস্যায় পড়তে হয় প্রাকৃতিক কাজ সারতে। সরেজমিন দেখা যায়, স্টেশনের মূল শেডের নিচে টাঙানো সারি সারি মশারি। একেকটির মধ্যে দু-তিনজন করে শুয়ে আছেন। বসে আছেন কেউ। গরমের কারণে কেউ কেউ করছেন ঘোরাঘুরি। রাজশাহীর বাগমারা থেকে আসা রহিম মণ্ডল বলেন, তিনি এক সপ্তাহ আগে এসেছেন। প্রতিদিন সকালে রেল স্টেশনের পাশের চত্বর থেকে নগদ চুক্তিমূল্যে শ্রম বিক্রি করেন। গৃহস্থের বাড়িতে সকাল-দুপুর খাবার খেয়ে রাতে খান হোটেলে। এরপর স্টেশনে রাত যাপন করেন। নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার মহিদুল ইসলাম বলেন, উত্তরবঙ্গে এখন কাজের আকাল। তাই ট্রেনে ফরিদপুরে এসেছি। প্রতি ৩০ শতাংশ জমি ১৫০০-১৬০০ টাকায় ঠিকা নিয়ে ধানের চারা রোপণ করছি এক সপ্তাহ ধরে। আরেক শ্রমিক বছির উদ্দিন বলেন, প্রতিদিন সকালে বিক্রি হয়ে বিভিন্ন স্থানে কাজ করতে যাই। দিন হিসাবে বিক্রি হলে ৭০০-৮০০ টাকার পাশাপাশি দুই বেলা খাবার পাই। আবার পাখিপ্রতি ১৮০০-২০০০ টাকা ঠিকায়ও ধান রোপণের কাজ করি।

স্থানীয় ছোলনা গ্রামের বাসিন্দা মিজানুর রহমান মিজান বলেন, উত্তরবঙ্গ থেকে আসা এসব দিনমজুর শ্রমিক সংকট দূর করার পাশাপাশি রেল স্টেশন এলাকা সকাল-সন্ধ্যা সরগরম করে রাখেন। এলাকার মুদি, চা দোকান ও বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের বেচাবিক্রি বেড়েছে।

 

সর্বশেষ খবর