শুক্রবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

উপকূলে জলদস্যু-চাঁদাবাজের উপদ্রব

প্রতিদিন ডেস্ক

উপকূলে জলদস্যু-চাঁদাবাজের উপদ্রব

উপকূলীয় এলাকায় নদনদীতে ধরা পড়তে শুরু করেছে প্রচুর রুপালি ইলিশ। সেই সঙ্গে বেড়েছে জলদস্যু আর চাঁদাবাজদের উৎপাত। কচিখালী-কটকা এলাকায় নতুন শুরু হয়েছে স¥ার্ট বাহিনীর চাঁদাবাজি। এ কারণে প্রচুর ইলিশ পাওয়ার আনন্দ এখন শঙ্কায় পরিণত হয়েছে জেলেদের কাছে। আমাদের প্রতিনিধিরা এ খবর পাঠিয়েছেন। ভোলা : ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে জেলেদের জালে ধরা পড়তে শুরু করেছে রুপালি ইলিশ। দীর্ঘদিন প্রতীক্ষার পর কাক্সিক্ষত মাছ পাওয়ায় জেলেপল্লীগুলো সরগরম হয়ে উঠেছে। তবে এরপরও জেলেদের মনে নেই আনন্দ। তারা জলদস্যু আর চাঁদাবাজদের ভয়ে থাকেন শঙ্কিত। জেলেরা জানান, নদীতে প্রচুর মাছ পড়ার সঙ্গে সঙ্গে জলদস্যুদের উৎপাতও বেড়েছে। প্রতিদিনই কোনো না কোনো নৌকায় হানা দিয়ে জাল মাছসহ মালামাল ছিনিয়ে নেওয়া হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নাম দিয়েও চলছে চাঁদাবাজি। চরফ্যাশন উপজেলার সবচেয়ে বাড় মাছঘাট হচ্ছে সামরাজ মাছঘাট। এ ঘাটের জেলে সমিতির সভাপতি জয়নাল আবেদিন জানান, কোস্টগার্ড, নৌপুলিশের তৎপরতায় জলদস্যুদের উৎপাত কিছুটা কমেছিল। সম্প্রতি সে উৎপাত বেড়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নামে একটি গ্রুপ চাঁদাবাজি করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। সামরাজ মৎস্য সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন মিয়া জানান, ৫ সেপ্টেম্বর থেকে জলদস্যুদের পাশাপাশি পুলিশের পোশাক পরিহিত লোকজন জেলেদের মাছ ও মাঝিকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। মাঝিসহ ট্রলার আটকে রেখে ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। বিকাশের মাধ্যমে টাকা দেওয়া হলে জেলেদের ছেড়ে দেয়।  ভোলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামানান জানান, অভিযোগের বিষয়টি জেলা পুলিশ গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। তদন্তসাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাথরঘাটা : বলেশ্বর নদ সংলগ্ন সুন্দরবনের কচিখালী-কটকা এলাকায় স্মার্ট বাহিনীর গুলিতে জয়নাল মাঝি (৩০) নামে এক জেলে গুলিবিদ্ধ হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার ভোরে  কচিখালী-কটকা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ১ সেপ্টে¤¦র থেকে সুন্দরবন সবার জন্য উন্মুক্ত ঘোষণা হলেও এ ঘটনায় হতবাক মৎস্যজীবীরা। আহত জয়নাল বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার রুহিতা গ্রামের আ. রশিদের ছেলে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে বরিশাল মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে।

 আহত জয়নাল জানান, সুন্দরবনের কচিখালী কোস্টগার্ড ক্যাম্পের পাশে ট্রলার নোঙর করে মাছ বাছাই করার সময় স¥ার্ট বাহিনী এসে স¥ার্ট তালিকায় নাম আছে কি না জানতে চায়। ওই তালিকায় তাদের নাম না থাকায় এলোপাতাড়ি গুলি করা হয়।

জয়নালের অভিযোগ, কচিখালী-কটকা এলাকায় মাছ ধরতে মাসোয়ারা দিতে হয় স্মার্ট বাহিনীকে। চলতি মাসের টাকা না দেওয়ায় স্মার্ট বাহিনী (টহল টিম) তাদের ধাওয়া করে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক জেলে জানান, আগে জলদস্যুদের বছরে একবার টাকা দিলে নিরাপদে মাছ শিকার করা যেত। এখন স্মার্ট বাহিনীকে প্রতি মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার করে টাকা দিতে হয়। তা না হলে বিভিন্নভাবে হয়রানি এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে পাঠানো হয়।

বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, সুন্দরবন এলাকায় মাছ ধরতে হলে স্মার্ট বাহিনীকে টাকা দিতে হয়। তা না দিলে জেলেদের ট্রলার আটকে রেখে নির্যাতন করে। বিষয়টি নিয়ে আমি জেলা আইনশৃঙ্খলা সভায় উপস্থাপন করেছি।

পাথরঘাটা থানার তদন্ত ওসি সাইফুজ্জামান বলেন, এক জেলে বন বিভাগের স্মার্ট বাহিনীর হাতে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে বন বিভাগের কচিখালী বিট কর্মকর্তা আ. ছবুরকে মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি এসিএফ স্যারের সঙ্গে কথা বলতে বলেন ও সংযোগ কেটে দেন। পরে তার সঙ্গে আবারও যোগাযোগের চেষ্টা করলে মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

সর্বশেষ খবর