মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

বন্যার পর আমন চারা সংকট

ক্ষতিগ্রস্ত কুড়িগ্রামের কৃষক

খন্দকার একরামুল হক সম্রাট, কুড়িগ্রাম

বন্যার পর আমন চারা সংকট

রৌমারিতে ধানের চারার হাট -বাংলাদেশ প্রতিদিন

পরপর দুই দফা বন্যায় সদ্য রোপিত আমন ধান নষ্ট হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত কুড়িগ্রামের কৃষক। সেই সঙ্গে নষ্ট হয়েছে বীজতলাও। এখন তারা পড়েছেন আমন চারা সংকটে। বাজারে সীমিত কিছু চারা কিনতে পাওয়া যাচ্ছে। তবে দাম অনেক চড়া। তাই কীভাবে আমন আবাদ করবেন এ নিয়ে তারা পড়েছেন দুশ্চিন্তায়। সংশ্লিষ্টরা জানান, অবিরাম বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কুড়িগ্রামে নদনদীর পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরপর দুই দফা বন্যায় সদ্য রোপিত আমন খেত তলিয়ে যায়। বন্যার পর জেগে উঠেছে পচা খেত। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, বন্যায় জেলার আমন আবাদ, বীজতলাসহ প্রায় ৭ হাজার হেক্টর জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়। পুরোপুরি নষ্ট হয়েছে ১ হাজার ২০০ হেক্টর জমির আমন খেত ও বীজতলা। এখন অনেক এলাকায় দেখা দিয়েছে চারা সংকট।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মতে, রৌমারী ও রাজীবপুরের বন্যায় ১ হাজার হেক্টর জমির রোপা আমনের খেত নষ্ট হয়েছে। শাকসবজিসহ অন্য ফসলও নষ্ট হয়। পুকুরের মাছও চলে যায়। নষ্ট হয়ে যাওয়া ধান খেত দেখে অনেক কৃষক হতাশায় পড়েছেন। তারা এখন চারা সংগ্রহে হন্যে হয়ে ঘুরছেন। বাজারে সীমিত কিছু চারা কিনতে পাওয়া যাচ্ছে তবে দাম অনেক চড়া। কেউ কেউ চারা দ্বিগুণ দামে কিনছেন। কৃষকের হিসাবে ৮০ আঁটিতে ১ পোন চারা পাওয়া যাচ্ছে, যার দাম ৮০০ থেকে ১৪০০ টাকা পর্যন্ত। এ দুই উপজেলার হাটবাজারে আমন চারা কেনার হিড়িক পড়েছে।

কৃষক বলছেন, ৬২ শতকের ১ বিঘা জমির আমন চারা কিনতে হচ্ছে ১০ হাজার টাকায়। রৌমারী উপজেলার চরের বাজার এলাকায় আমন চারা কিনতে আসা কৃষক মজনুর আলী বলেন, ‘চারা কিনতে গিয়ে লাভ-লস দেখার সময় নেই। আমরা সবাই আমন আবাদ করি। দাম অনেক বেশি হলেও চারা কিনতে হবে।’ রাজীবপুর উপজেলার শৈলমারী চরের কৃষক জমির মিয়া বলেন, ‘আমনের অনেক ক্ষতি হয়েছে। এর পরও চড়া দামে চারা কিনতে এসেছি। কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে না।’

রৌমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাইয়ুম চৌধুরী জানান, চলতি মৌসুমে ১০ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত জানান, কৃষককে বালাম পদ্ধতিতে চারা দিয়ে আমন লাগানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আশা করা যায়, তারা ঘুরে দাঁড়াবেন।

সর্বশেষ খবর