বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

শিক্ষক সংকটে ব্যাহত পাঠদান

খাগড়াছড়ির ১০টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২৪২ পদের ১০৫টিই শূন্য

মো. জহুরুল আলম, খাগড়াছড়ি

খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় উপজেলার প্রধান বিদ্যাপীঠ। এখানে শিক্ষার্থী সংখ্যা ৫৮০। বিদ্যালয়টিতে প্রধান শিক্ষকসহ শিক্ষকের পদ রয়েছে ২১টি। সেখানে কর্মরত আছেন কেবল পাঁচ শিক্ষক। এর মধ্যে বিজ্ঞান ও গণিতের কোনো শিক্ষকই নেই। দীঘিনালা সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র দেবজিৎ বড়ুয়া ও অর্ণব চৌধুরী বলে, আমরা বিজ্ঞান বিভাগে পড়ি। কিন্তু বিজ্ঞানের কোনো শিক্ষক নেই। ফিজিক্স, কেমেস্ট্রি, ম্যাথ, বায়োলজি পড়তে কষ্ট হচ্ছে। আমাদের পরীক্ষার রেজাল্ট খারাপ হচ্ছে। একই অবস্থা জেলার অন্য ৯টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়েও। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জেলার ১০টি সরকারি মাধ্যমিক উচ্চবিদ্যালয়ের মধ্যে ৭টিতেই প্রধান শিক্ষক নেই। এসব বিদ্যালয়ে ২৪২টি শিক্ষকের পদ রয়েছে। এর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে ১০৫টি পদ। ফলে স্কুলগুলোতে পাঠদান মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা কেউ কেউ সরকারি স্কুল ছেড়ে বেসরকারি স্কুলের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। জেলা সদরে সরকারি উচ্চবিদ্যালয় রয়েছে দুটি। এর মধ্যে জেলা সদরের একমাত্র সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই দীর্ঘদিন। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে কোনোরকমে চলছে স্কুলের কার্যক্রম। খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন পর প্রধান শিক্ষক যোগদান করেছেন। এ স্কুলে দুটি শিফটে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১৪০০। এখানে ৫৪ শিক্ষকের পদের মধ্যে কর্মরত রয়েছেন ২৮ জন। এখানে শূন্য পদ ২৬টি। তবে প্রধান শিক্ষক এস এম মোসলেম উদ্দিনকে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। একই চিত্র পানছড়ি, মহালছড়ি, গুইমারা, রামগড়, লক্ষ্মীছড়ি, মাটিরাঙ্গা ও মানিকছড়ি উপজেলার মাধ্যমিক স্কুলগুলোতেও। শিক্ষক সংকটে শিক্ষার মান দিন দিন কমে যাচ্ছে। ব্যাহত হচ্ছে প্রায় ৭ হাজার শিক্ষার্থীর পাঠদান। অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। দীঘিনালা সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ওমর ফারুক হোসেন বলেন, নবম এবং দশম শ্রেণিতে গ্রুপ সাবজেক্ট পড়াতে কষ্ট হয়। সায়েন্স, ম্যাথ, বাংলার শিক্ষক নেই। সংকটের ফলে গেস্ট টিচার নিতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ। দীঘিনালা সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোহা. এখতার আলী জানান, কিছু গেস্ট টিচার নিয়েছি। কিন্তু তাদের দিয়ে ক্লাস নেওয়া খুবই কঠিন হয়ে যাচ্ছে। গেস্ট টিচারদের ঠিকমতো সম্মানী দিতে পারি না। খাগড়াছড়ি জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম মোসলেম উদ্দিন বলেন, বিপুলসংখ্যক শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় শ্রেণি পাঠদান মারাত্মকভাবে বিঘ্ন ঘটছে। শিক্ষক সংকটের তালিকা তৈরি করে শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালকের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর