সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

পর্যটকশূন্য মৌলভীবাজার

কাগজে-কলমে পর্যটন পরিকল্পনা

দীপংকর ভট্টাচার্য লিটন, শ্রীমঙ্গল

পর্যটকশূন্য মৌলভীবাজার

পর্যটনের অপার সম্ভাবনাময় মৌলভীবাজার। এ জেলার একদিকে ধু-ধু প্রান্তরজুড়ে নয়নাভিরাম চা বাগান। আঁকাবাঁকা পাহাড়-টিলায় সবুজ বৃক্ষরাজি। ওপরে নীল আকাশ। পাহাড়ের চূড়া থেকে নিসৃত ঝরনাধারা, নদ-নদী, খাল-বিল আর দিগন্ত বিস্তৃত হাইল-হাওরের নীল জলরাশি। চা বাগানের ছোট-বড় হ্রদ, খনিজ গ্যাসকূপ, লেবু, আনারস, পান আর আগর বাগান। জেলার নয়টি উপজেলায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে ক্ষুদ্র-নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর বৈচিত্র্যপূর্ণ জীবনধারা। তাদের রয়েছে আলাদা সংস্কৃতি ও উৎসব। কানাডিয়ান ফ্রিল্যান্স লেখক এন্টনি ও ডেন্টাল এখানকার প্রকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে মৌলভীবাজারকে ‘এক খন্ড স্বর্গ’ বলে আখ্যায়িত করেছিলেন। একসময় প্রকৃতির এই নয়নাভিরাম সৌন্দর্য দেখতে এখানে পর্যটকের ভিড় লেগেই থাকত। কিন্তু এখন আর সেই চিত্র নেই। বর্তমানে পর্যটকশূন্য এই জেলা। দিনে কিছু পর্যটক এলেও রাতে থাকছেন না। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন এই খাতে বিনিয়োগকারীরা। পর্যটন সংশ্লিষ্টরা এর জন্য সরকারের পর্যটন শিল্পের বিকাশ নিয়ে কর্মকৌশল বাস্তবায়ন না হওয়াকেই দায়ী করছেন।

সূত্র জানায়, পর্যটকের খড়া কাটিয়ে উঠতে ২০১৭ সালে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন থেকে পর্যটন শিল্পের বিকাশ, সমস্যা ও সম্ভাবনাগুলো চিহ্নিত করে একটি কর্মকৌশল প্রণয়ন করা হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘ ছয় বছরেও এর বাস্তবায়ন হয়নি। রয়ে গেছে কাগজে-কলমে। এছাড়া ২০২২ সালে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে জেলা পর্যটন উন্নয়ন কমিটির সভার সিদ্ধান্তগুলোও বাস্তবায়ন হয়নি। এছাড়া ২০০৮ সালে এ জেলাকে পর্যটন জেলা ঘোষণা করা হলেও আজও গেজেট হয়নি।  জানা যায়, গত পাঁচ বছরে পর্যটকনির্ভর শ্রীমঙ্গল উপজেলায় হিলভিউ গেস্ট হাউস, তানভীর গেস্ট হাউস, ব্লু-বেল গেস্ট হাউস, হামিদা গেস্ট হাউস, মুন ড্রিম রেস্ট হাউস, শ্রীমঙ্গল রেস্ট হাউস ও শান্তনীড় রেস্ট হাউস বন্ধ হয়ে গেছে। সম্প্রতি ভাড়া দিয়ে দেওয়া হয়েছে এসকেডি আমার বাড়ি রিসোর্ট। আমার বাড়ি রিসোর্টের মালিক সজল দাশ বলেন, পর্যটক কম আসায় প্রতি মাসেই ক্ষতি হচ্ছে। তাই রিসোর্ট ভাড়া দিয়ে দিয়েছি। শ্রীমঙ্গল পর্যটন সেবা সংস্থার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সেলিম আহমেদ বলেন, ‘পর্যটক কমছে এটা সত্য। তবে এর কোনো পরিসংখ্যান আমাদের কাছে নেই।’ মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক ও জেলা পর্যটন উন্নয়ন কমিটির সভাপতি ড. উর্মি বিনতে সালাম বলেন, ‘২০১৭ সালের কর্ম পরিকল্পা ধরেই আমরা এগোচ্ছি। পর্যটন স্পটগুলোকে কীভাবে পর্যটক আকৃষ্ট করা যায় সে চেষ্টা আমরা কাজ করছি।’

সর্বশেষ খবর