মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

কেন এত প্রাণহানি সড়কে

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ৫৭ কিলোমিটারে তিন মাসে ২৩ জনের মৃত্যু

সঞ্জিত সাহা, নরসিংদী

কেন এত প্রাণহানি সড়কে

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আড়াইহাজার থেকে ভৈরব পর্যন্ত অংশ মৃত্যু ফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। ঝরছে প্রাণ। এক হিসাব মতে, গত ৩ মাসে এখানে নিহত হয়েছেন ২৩ জন। স্থানীয়রা বলছেন, সড়কে পৃথক লেন ও রোড ডিভাইডার না থাকাসহ নানা কারণে এত দুর্ঘটনা, প্রাণহানি হলেও প্রতিরোধে কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ে না। তবে হাইওয়ে পুলিশ বলছে, অদক্ষ চালক ও বেপরোয়া গতিতে যানবাহন চালানোর কারণেই মহাসড়কের এ অংশে বাড়ছে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি। হাই ওয়ে পুলিশ সূত্র জানায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থেকে কিশোরগঞ্জের ভৈরব পর্যন্ত ৫৭ কিলোমিটার অংশে বেশি দুর্ঘটনা ঘটে। গত ৩ মাসে এই সড়কে ১২টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে নিহত হয়েছেন ২৩ জন। আহত হয়েছেন ১৮ জন। ২০১১ সালে মহাসড়কের ঘাসিরদিয়ায় মাছ বোঝাই ট্রাকের সঙ্গে পুলিশের গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষে নরসিংদীর বেলাবো থানার ২ ওসিসহ ১০ পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছিলেন। এর পরেও একই স্থানে সরাইল থানার ওসিসহ ২ পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হন। নরসিংদীর শিবপুরের ঘাসিরদিয়ায় ২৫ আগস্ট ট্রাক-মাইক্রোবাস মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রাণ হারান একটি পোশাক কারখানার ৭ কর্মকর্তা। আহত হন আরও চারজন। সর্বশেষ শিবপুরের শ্রীফুলিয়ায় মাইক্রোবাস-ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষে চালকসহ তিনজন নিহত হন। আহত হন ছয়জন। এর ৫ ঘণ্টা আগে রায়পুরা উপজেলার মরজাল শিমুলতলী এলাকায় বাস-সিএনজি অটোরিকশা সংঘর্ষে নারীসহ তিনজন মারা যান। আহত হন আরও তিনজন। এই মহাসড়কের পাশের শহীদ মিনার এলাকার ওষুধ দোকান মালিক আরিফুল ইসলাম বলেন, শিবপুরের মরজাল, শহীদ মিনার ঘাশিরদিয়া, সৃষ্টিঘর, শ্রীফুলিয়া এলাকায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। এত দুর্ঘটনা, প্রাণহানি হলেও তা প্রতিরোধে কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ে না। একই এলাকার বাসিন্দা নজরুল বলেন, মহাসড়কটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। নরসিংদী ইটাখোলা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ ইলিয়াস হোসেন বলেন, হাইওয়ে পুলিশের মিশন ভিশন হচ্ছে  নিরাপদ সড়ক উপহার দেওয়া। মানুষের যাতায়াতের জন্য এই পথে নিরাপত্তা দেওয়া। কিন্তু অদক্ষ চালকের বেপরোয়া মনোভাব আর ওভারটেকিং প্রতিযোগিতায় ইদানীং এ মহাসড়কে দুর্ঘটনা বাড়ছে। সরকার পেশাদার চালক তৈরিতে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। চালকদের বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হামিদুল ইসলাম বলেন, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কটি যথেষ্ট প্রশস্ত করা হয়েছে। বাকিগুলোও প্রশস্ত করা হয়েছে। সড়কটিতে জিওমেট্রিক কোনো সমস্যা নেই। এ সড়কে সর্বোচ্চ ৮০ কি:মি: গতিতে যানবাহন চালানোর নির্দেশনা থাকলেও চালকরা তা মানছে না। সাইড রোড থেকে যত্রতত্র অনেক যানবাহন মহাসড়কে উঠে যাচ্ছে। তখন দুর্ঘটনা ঘটে। তিনি আরও বলেন, এই মহাসড়ক ৬ লেনে উন্নীতকরণের কাজ চলছে। তখন মুখোমুখি সংঘর্ষসহ দুর্ঘটনার হার কমে আসবে।

সর্বশেষ খবর