টানা বর্ষণে দেশের উত্তরাঞ্চলে নদনদীর পানি বাড়ছে। রংপুরের কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১০, বদরগঞ্জে যমুনেশ্বরীর পানি ১৪ ও দিনাজপুরে পুনর্ভবার পানি ৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর- রংপুর : টানা বর্ষণে তিস্তার পানি রংপুরের কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বদরগঞ্জে যমুনেশ্বরী নদীর পানি বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে- ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও গঙ্গা-পদ্মাসহ নদনদীর পানি সমতলে বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার, আপার করতোয়া, আপার আত্রাই, কুলিখ, টাঙ্গন, যমুনেশ্বরী এবং পুনর্ভবা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের মহানন্দা, ছোট যমুনা, করতোয়া ও আত্রাই নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। কাউনিয়া উপজেলায় তিস্তা নদীতে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। গদাই ও পাঞ্জরভাঙ্গা গ্রামের ফসলি জমি ও বেশকিছু বসত ভিটা নদীগর্ভে চলে গেছে। দিনাজপুর : জেলায় পুনর্ভবা নদীর পানি গতকাল দুপুর থেকে বিপৎসীমার ৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নিম্নাঞ্চলে বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করেছে। দুর্ভোগে পড়েছে বিরলের কাঞ্চন ঘাট নয়াপাড়া, সদরের মাহুদপাড়া, কাঞ্চন কলোনি, বিরল মোড়, বাঙ্গি বেচাসহ বিভিন্ন এলাকার পানিবন্দি মানুষ। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ১৯১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান জানান, বৃষ্টি ও উজানের ঢলের কারণে নদীর পানি বাড়ছে। দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের সহকারী কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, বুধবার পর্যন্ত বৃষ্টি হবে।
কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রামে আবারো সব নদনদীর পানি বাড়ছে। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় তিস্তার পানি বেড়ে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন নদী তীরবর্তী এলাকার আমন চাষিরা। নতুন করে আমন আবাদ তলিয়ে গেলে মারাত্মক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তারা। উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের চরের বাসিন্দা আবদুল হাকিম জানান, আবার আমন আবাদ তলিয়ে যেতে পারে। রাজারহাট উপজেলার খিতাব খাঁ এলাকার কৃষক হরিহর চন্দ্র জানান, সদ্য বেড়ে ওঠা আমন তলিয়ে গেলে আমরা মাঠে মারা যাব। এর আগে আরও দুবার আমন খেত নষ্ট হয়েছে। কৃষি কর্মকর্তা খোরশেদ আলম বলেন, শীতকালীন মরিচ ও চালকুমড়াসহ বিভিন্ন শাক সবজির ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তিস্তার অববাহিকায় দেখা দিয়েছে ভাঙন। পানি কমে গেলে আবারও ভাঙন বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বগুড়া : বগুড়ার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলায় আবারও বাড়তে শুরু করেছে যমুনার পানি। ফসলহানির শঙ্কায় রয়েছেন যমুনাপাড়ের কৃষকরা। গত তিন দিনে পানি ৯৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে।