মঙ্গলবার, ৩ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

অপহরণ আতঙ্কে শত শত পরিবার

♦ শনাক্ত হয়নি চাঁদাবাজরা ♦ শিশুদের নিরাপত্তায় র‌্যাব-পুলিশের টহল

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

বগুড়ার কাহালুতে বিষ্ণুপুর গ্রামের শত শত পরিবার সন্তান অপহরণ আতঙ্কে দিন পার করছে। হুমকি দিয়ে বিভিন্ন অঙ্কের চাঁদা দাবি করে বাড়ির দেয়ালে দেয়ালে লিফলেট সাঁটানোর ২৪ ঘণ্টা পরও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এতে জড়িত কাউকে শনাক্ত করতে পারেনি। দুর্বৃত্তরা শনাক্ত ও গ্রেফতার না হওয়ায় ছেলেমেয়েদের নিয়ে শঙ্কা কাটছে না গ্রামবাসীর। শিশুদের নিরাপত্তায় পুলিশের একটি ও র‌্যাবের দুটি দল সার্বক্ষণিক সেখানে টহল দিচ্ছে। এরপরও অভিভাবকরা কেউ কেউ সন্তানদের স্কুল বা মাদরাসায় পাঠাচ্ছেন না। কেউ কেউ সন্তানদের সঙ্গে স্কুলে যাওয়া-আসা করছেন। অনেকে শিশুদের বাইরে খেলাধুলা করতেও যেতে দিচ্ছেন না।

বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী গতকাল বিষ্ণুপুর গ্রাম পরিদর্শনে যান। এ সময় তিনি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে গ্রামের মানুষের সঙ্গে কথা বলেন ও আতঙ্কগ্রস্ত না হওয়ার পরামর্শ দেন। পুলিশ সুপার জানান, গ্রামবাসীকে আশ্বস্ত করা হয়েছে দুর্বৃত্তরা তাদের ক্ষতি করতে পারবে না। জেলা পুলিশের একাধিক দল ঘটনার রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে। গোয়েন্দা পুলিশ সাদা পোশাকে গ্রামে নজরদারি চালাচ্ছে। জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে রবিবার সন্ধ্যায় একটি জিডিও করা হয়েছে। এর আগে শনিবার দিবাগত রাতে দুর্বৃত্তরা কাহালুর বিষ্ণুপুর গ্রামের শিশুদের অপহরণের হুমকি দিয়ে বিভিন্ন অঙ্কের চাঁদা দাবি করে বাড়ির দেয়ালে কথিত শ্যাডো বাহিনী লিফলেট সেঁটে দেয়। রবিবার ভোরে বাড়ির সামনে এসব লিফলেট দেখে গ্রামবাসী আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। লিফলেটে বিভিন্ন বাড়ির আর্থিক ও পারিবারিক অবস্থা বিবেচনা করে ২০০ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা দাবি করা হয়েছে। অন্যথায় ৭ অক্টোবরের পর গ্রামের ছেলেমেয়ে হারিয়ে গেলে কোনো কিছু করার থাকবে না বলে হুমকি দেওয়া হয়। বিষ্ণুপুর গ্রামের দফতরিপাড়ার বাসিন্দা আবদুল আলিম বলেন, কেউ তো শনাক্ত বা গ্রেফতার হয়নি, আতঙ্ক কাটবে কীভাবে? এখন না হয় পুলিশ-র‌্যাব আছে কয়েকদিন বাদে কেউ থাকবে না। আজও ছেলেকে স্কুলে যেতে দিইনি। জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করা হোক। বিষ্ণুপুরের মিস্ত্রিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আঁখি আক্তার বলেন, মেয়েকে আজ মাদরাসায় নিয়ে যাওয়া-আসা করেছি। প্রতিদিন তো আর সম্ভব নয়। এভাবে চললে গ্রাম ছাড়তে হবে। র‌্যাব-১২ বগুড়ার কোম্পানি কমান্ডার (পুলিশ সুপার) মীর মনির হোসেন জানান, কাহালুর ঘটনায় ছায়াতদন্ত চলছে। ওই গ্রামে টহলসহ নজরদারি অব্যাহত আছে।

সর্বশেষ খবর