মঙ্গলবার, ৩ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

এক পরিবারে সাত প্রতিবন্ধী

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

এক পরিবারে সাত প্রতিবন্ধী

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের সাংকারচওড়ার এক পরিবারের ১১ সদস্যের সাতজনই প্রতিবন্ধী। গ্রামগঞ্জের হাটেবাজারে দোতারা বাজিয়ে সংসারের খরচ বহন করছেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী নুরুন্নবী ইসলাম। দোতারা বাজিয়ে প্রতিদিন গান পরিবেশন করেন তিনি। এতে যা আয় হয় তা দিয়েই খাওয়াপরা চলে বাকি নয়জনের। আয় কমে গেলে মানুষের আকর্ষণ বাড়াতে দেখান খেলাও। নুরুন্নবী (২৬) সাংকারচওড়া গ্রামের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এন্তাজুল হকের ছেলে। স্থানীয়রা জানান, জন্ম থেকে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এন্তাজুল হক। তার স্ত্রী নুরজাহান বেগম শারীরিকভাবে সুস্থ। আগে নুরজাহানের সহায়তায় চলত এন্তাজুলের সংসার। তাদের প্রথম সন্তান নুরুন্নবীও বাবার মতো দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। এ দম্পতির দ্বিতীয় সন্তান নুর আলম (২৪), তৃতীয় সন্তান লিমন ইসলাম (২২) ও চতুর্থ সন্তান রেশমাও (১৩) দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হয়ে জন্ম নেন। নয় বছর আগে নুরজাহান-এন্তাজুল দম্পতির সংসারে সুস্থ সবল শিশু সেমন ইসলামের জন্ম হয়। এরই মধ্যে বড় দুই ছেলে বিয়ে করেছেন। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী দুই ছেলেকে বিয়ে করতে কোনো সুস্থ মেয়ে রাজি হননি। বাধ্য হয়ে একজনকে মানসিক ও একজনকে শ্রবণপ্রতিবন্ধী মেয়ের সঙ্গে বিয়ে দিয়েছেন। এ নিয়ে তাদের পরিবারে প্রতিবন্ধীর সংখ্যা হয়েছে সাতজন। বড় দুই ছেলের ঘরে জন্ম হয়েছে দুই নাতি-নাতনি। তারা সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে আছে।

বর্তমানে একমাত্র উপার্জনক্ষম দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী নুরুন্নবী বলেন, গানবাজনা করতে হাটেবাজারে যেতে হয়। সেখানে একা যাওয়া এবং আসর জমানো কষ্টকর। প্রথমদিকে অন্যের সহায়তা নিতাম। যাকে সঙ্গে রাখি সে চুরি করে। তাই একাই চলি। গান গেয়ে ৩০০-৪০০ টাকা আয় হয়, তা দিয়ে চলছে এ সংসার। স্থানীয় ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, একই পরিবারের সাত প্রতিবন্ধীর মধ্যে পাঁচজনকে ভাতা করে দেওয়া হয়। বাকি দুজনের ভাতার কাজ চলছে। আদিতমারী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মাসুদ রানা বলেন, ওই পরিবারকে ভাতা ছাড়াও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা দেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর