শনিবার, ৭ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

আগ্রহ বাড়ছে কলা চাষে

রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

আগ্রহ বাড়ছে কলা চাষে

দিনাজপুরের কলার হাট -বাংলাদেশ প্রতিদিন

কলা চাষের উপযোগী জলমুক্ত উঁচু জমি, ভালো ফলন, চাষে কম পরিশ্রম আর ভালো দাম পাওয়ায় কয়েক বছরে দিনাজপুরের কৃষকদের কলা চাষে আগ্রহ বেড়েছে। উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ দিনাজপুরের ‘দশ মাইল কলার হাট’ থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় কলা সরবরাহ হয়ে থাকে। প্রতিদিন এখানে প্রায় কোটি টাকার বাণিজ্য হয়। এ হাটে দেখা যায়, বাজারজুড়ে সারি সারি কলার কাঁদি সাজানো। প্রতিদিন সকাল থেকেই ব্যস্ত কলা চাষি, ব্যবসায়ী ও পাইকাররা। ট্রাকে কলা উঠানোর দৃশ্যও দেখা যায়। জেলার সবকটি উপজেলায় কলা চাষ করা হয়। ৬৫ থেকে ৭০ শতাংশ কলা চাষ হয় জেলার সদর, বীরগঞ্জ, চিরিরবন্দর, কাহারোল ও বিরল উপজেলায়। শ্রাবণ মাসে শুরু হয়ে কার্তিক মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত কলা বিক্রি চলে। বিভিন্ন এলাকা থেকে ভ্যান, পিকআপ ও নসিমনে এ হাটে বিক্রির জন্য কলা আনেন কলা চাষি ও ব্যবসায়ীরা। ভোর থেকে কলার হাটে বেচাকেনা শুরু হয়ে চলে সকাল ১০টা পর্যন্ত। দিনাজপুরের মেহেরসাগর কলার খ্যাতি দেশজুড়ে। পাশাপাশি সবরি, সুন্দরী (মালভোগ), চিনি চাম্পা কলার চাষও হয় এ এলাকায়। কলা চাষে পর্যাপ্ত রোদ ও আলো বাতাসের প্রয়োজন হয়। এবারের আবহাওয়া কলার জন্য বেশ উপযোগী হওয়ায় আবাদও ভালো হয়েছে, জানান চাষিরা। কাহারোলের সুকুমার রায় বলেন, গত বছর দাম কম ছিল। গত বছর যে কাঁদি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে এবার সেই কলা ৪৫০-৫২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। বীরগঞ্জ উপজেলার কলা চাষি রফিকুল ইসলাম বলেন, এক বিঘায় ৭০০ পর্যন্ত গাছ লাগানো যায়। রোপণ থেকে ফসল উত্তোলন পর্যন্ত সার-কীটনাশক, পরিচর্যা বাবদ প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়। প্রতি কাঁদি কলার দাম ৪০০ টাকা হলেও ১ লাখ টাকার ওপরে লাভ থাকে। নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী লুৎফর রহমান বলেন, চাষিদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো হলে অনেক সময় অগ্রিম টাকাও দেওয়া হয়। শ্রমিকের মজুরি, ট্রাক ভাড়া সব কিছু বাড়ায় লাভ কমেছে। মিজানুর রহমান জানান, মৌসুমে প্রতিদিন ৭০-৮০ লাখ টাকার কলা কেনাবেচা হয় এ হাটে। প্রতিদিন গড়ে ১৬-২০টি ট্রাক লোড হয়। একটি বড় ট্রাকে সর্বনিম্ন ৭০০ কাঁদি কলা ধরে। ছোট ট্রাকে ৪৫০ কাঁদি কলা ধরে। মৌসুমে এ হাটে লোড আনলোডের কাজ করেন প্রায় ১০০ শ্রমিক। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, কলা বর্ষজীবী উদ্ভিদ। কলা চাষে খরচ কম, ঝুঁকি ও রোগবালাই কম থাকায় দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে কলা চাষে। কলার খেতে সাথী ফসল হিসেবে অন্যান্য শাকসবজি চাষ করেও লাভবান হচ্ছেন কৃষক। কলা চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে কৃষি বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে। গত অর্থবছরে খরিপ-১ ও রবি মৌসুমে জেলায় কলার আবাদ হয়েছে ১ হাজার ১৪৬ হেক্টর জমিতে। এবার ৩৪ হেক্টর জমিতে কলার আবাদ বেশি হয়েছে।

সর্বশেষ খবর