শনিবার, ৭ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

স্মৃতি হয়ে যাচ্ছে মোমাছি মৌচাক!

নীলফামারী প্রতিনিধি

স্মৃতি হয়ে যাচ্ছে মোমাছি মৌচাক!

এক সময়ে নীলফামারীর গ্রামীণ মেঠো পথে হাঁটলে রাস্তার ধারে গাছের উঁচু ডালে, ঘরের দেয়ালে হরহামেশাই চোখে পড়ত মৌচাক।  মৌমাছি মধু সংগ্রহে ভোঁ ভোঁ শব্দ করে আনাগোনা করত। এখন তেমন শোনা যায় না মৌমাছির সেই ভোঁ ভোঁ শব্দ। বড় বড় বৃক্ষরাজি না থাকায় আবাসস্থলের অভাব, ফল-ফসলে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার, জলবায়ু পরিবর্তন, অদক্ষ মধু সংগ্রহকারীরা মৌচাকে অগ্নিসংযোগ করে মৌমাছি পুড়িয়ে হত্যাসহ নানাবিধ কারণে প্রকৃতির এ অকৃত্রিম বন্ধু ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। এখন পুরো জেলা ঘুরে দুই-একটি মৌচাক চোখে মেলাভার। এতে মৌমাছি ও মধু উৎপাদন আশঙ্কাজনকভাবে কমে যাচ্ছে। সামাজিক প্রাণী মৌমাছি মৌচাকে দলবদ্ধভাবে বসবাস করে। বিভিন্ন ফুল-ফল থেকে রস সংগ্রহ করে মৌচাকে জমা করে। আর সেই তরল রস মৌচাকে জমাট বেঁধে তৈরি হয় মধু। এরা ফল-ফসলে ঘুরঘুর করে ঘুরে বেড়ায় আর দল বেঁধে ভোঁ ভোঁ শব্দে উড়ে চলার সঙ্গে গুনগুন গুঞ্জনে মাতিয়ে তোলে এর চারপাশ। নানা তন্ত্রেমন্ত্রে মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করে অনেক নিম্নআয়ের মানুষ সংসার চালাত।

ডোমার বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জাবেদুল ইসলাম বলেন, একটা সময় অনেকেই মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করে চালিয়ে ছিলেন জীবনজীবিকা। তবে আগের মতো মৌচাক না থাকায়, সেই পেশা ত্যাগ করে জীবিকার তাগিদে অনেকে বেছে নিয়েছেন অন্য পেশা। মধু সংগ্রহের সেসব দৃশ্য যেন এখন শুধুই স্মৃতি। কিশোরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লোকমান আলম বলেন, ওষুধ ও পুষ্টিকর খাদ্য হিসেবে মধুর গুরুত্ব অপরিসীম। শস্যের পরাগায়ণে মৌমাছির ভূমিকা যথেষ্ট। যা প্রাকৃতিকভাবে মধু উৎপাদন ও শস্যের পরাগায়ণে মৌমাছি রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসা দরকার। বর্তমানে বাড়ির আঙিনায় অতি সহজে মৌ চাষ করা যায়। এতে খাঁটি মধু পাওয়া যাবে। এর মাধ্যমে যেমন বেকারত্ব দূর হবে, তেমনি অর্থ পুষ্টি দুটোয় মিলবে।

পাশাপাশি প্রাকৃতিক পরাগায়ণের মাধ্যমে ফলফসলের উৎপাদনও বৃদ্ধি পাবে। কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে কৃষককে মৌ চাষে উৎসাহিত করা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর