রবিবার, ৮ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

শিক্ষক নেই আট বিষয়েই

সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে ৭০০ শিক্ষার্থীর জন্য পাঁচ শিক্ষক সংকট ১০ বছর ধরে

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

শিক্ষক নেই আট বিষয়েই

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় দহগ্রাম সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকটে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে। মাত্র পাঁচ শিক্ষক দিয়ে প্রায় ৭০০ শিক্ষার্থীর পাঠদান করা হয়। বিদ্যালয়টি জাতীয়করণের পর থেকেই শিক্ষক সংকট দেখা দিয়েছে। স্কুলের ১২টি বিষয়ের মধ্যে ইংরেজিসহ আটটিতেই কোনো শিক্ষক নেই। শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ভর্তি হতে পারছে না। দহগ্রাম সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে দেখা গেছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে এক ভাড়াটে শিক্ষক নবম শ্রেণির ক্লাস নিচ্ছেন। মাঠের পূর্ব দিকেই রয়েছে সুসজ্জিত ছয়তলা নতুন ভবন। ভবনের কাজ শেষ হলেও এখনো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্কুল কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেননি। এতে ক্লাসরুম সংকটে স্কুল মাঠে ক্লাস করছেন শিক্ষার্থীরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম-আঙ্গরপোতার একমাত্র মাধ্যমিক বিদ্যালয় এটি। ১৯৭৫ সালে এটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৯৯৬ সালে বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত হয়। ১৯৯৭ সালে এখান থেকে প্রথম এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পায়। ২০১১ সালের ১৯ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দহগ্রাম সফরে তিনবিঘা করিডোর ২৪ ঘণ্টা উন্মুক্ত ও এ ভূখন্ডের একমাত্র মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি জাতীয়করণের ঘোষণা দেন। ২০১৩ সালে এটি জাতীয়করণ করা হয়। এরপর নির্ধারিত শর্ত পূরণ না হওয়ায় অনেক শিক্ষক বাদ পড়ে যান। বিদ্যালয়ে শিক্ষকের ২৭টি পদ থাকার কথা। ২২ পদ ১০ বছরও সৃষ্টি হয়নি। মাত্র পাঁচ শিক্ষক নিয়ে চলছে এটি। ভাড়াটে শিক্ষক নিয়ে প্রায় ১০ বছর ধরে চলছে এখানকার পাঠদান কার্যক্রম। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত বিদ্যালয়টিতে প্রায় ৭০০ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক না থাকায় এতে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। বিজ্ঞান ও বাণিজ্য শাখার কোনো শিক্ষক না থাকায় ওই দুটি শাখায় কেউ পড়তে পারছে না। এতে হতাশ শিক্ষার্থী ও অভিভাবক। দীর্ঘদিন শূন্য থাকার পর চলতি বছরের জুলাই মাসে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন দীনেশ চন্দ্র রায়। বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র আরিফ হোসেন জানায়, প্রতিদিন স্কুলে আসি কিন্তু সব ক্লাস হয় না। তিন থেকে চারটি ক্লাস হয়। নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী আশা মণি জানায়, ইচ্ছে ছিল বিজ্ঞান বিভাগে পড়ব। কিন্তু স্কুলে বিজ্ঞান বিভাগের কোনো শিক্ষক নেই। তাই মানবিক বিভাগে ভর্তি হয়েছি। দহগ্রাম এলাকার মাইদুল ইসলাম বলেন, সরকারি করণের পর থেকে শিক্ষক সংকটে ভুগছে বিদ্যালয়টি। দিন দিন শিক্ষার মান কমে যাচ্ছে। শিক্ষক না থাকায় শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করছে। আমরা দ্রুত এর সমাধান চাই। প্রধান শিক্ষক দীনেশ চন্দ্র রায় বলেন, শিক্ষা অধিদফতরে শিক্ষক সংকটের বিষয়ে আবেদন করেছি। লালমনিরহাট জেলা শিক্ষা অফিসার আবদুল বারী বলেন, জুলাই মাসে শিক্ষাসচিব বিদ্যালয়টি পরিদর্শনে আসেন। বিষয়টি তিনি নোট করেছেন। আশা করছি, দ্রুত এ সংকট দূর হবে।

সর্বশেষ খবর