শিরোনাম
শুক্রবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

যমুনাগর্ভে এক বছরে নয় স্কুল

দুর্ভোগ শিক্ষার্থীদের ♦ ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাজীবন

আবদুস সামাদ সায়েম, সিরাজগঞ্জ

যমুনাগর্ভে এক বছরে নয় স্কুল

নদীতে ভবন বিলীন হওয়ায় টিনের চালার নিচে চলছে শ্রেণি কার্যক্রম

চলতি বছর যমুনার ভাঙনে বিলীন হয়েছে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি ও চৌহালী উপজেলার নয়টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন। এ অবস্থায় কোথাও স্কুলের প্রতিবেশীর বাড়ির আঙিনায় ছাপড়া তুলে, কোথাও মাঠে টিনের ছাউনি দিয়ে পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু সেখানে প্রয়োজনীয় চেয়ার-টেবিল-বেঞ্চ ও আসবাসপত্র নেই। রোদ-বৃষ্টি ও ঝড়ে কোমলমতি শিশু-শিক্ষার্থীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এতে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষাজীবন।

জানা যায়, যমুনার কোলঘেঁষে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি ও চৌহালী উপজেলা। এ নদীর ভাঙনে প্রতি বছর শত শত বসতভিটা ও বিপুল পরিমাণ ফসলি জমি বিলীন হয়ে যায়। সেই সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বিলীন হয়ে যায়। এ বছর চৌহালী উপজেলার চর মুরাদপুর, পশ্চিম শৈলজানা, ধুকুলিয়া, চান্দৈর, চরসলিমাবাদ, পয়লাপূর্বপাড়া চর সলিমাবাদ দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং বেলকুচি উপজেলার মেহেরনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ দুটি ভবন নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। বেলকুচির মেহেরনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানায়, স্কুলভবন নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। নদীর ২০০ মিটার দূরে মাঠে টিনের ছাউনি তুলে স্যাররা তাদের ক্লাস নেন। তারা জানায়, ‘এভাবে পড়াশোনা করা খুব কষ্ট হচ্ছে। বৃষ্টি হলেই বই-খাতা ভিজে যায়, আমরাও ভিজে যাই। একটু জোরে বৃষ্টি হলে অন্যের বাড়ি যেতে হয়।’ শিক্ষকরা বলছেন, শিক্ষার্থী যেন ঝরে না যায় সে জন্য কোনোরকম শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখা হয়েছে। ব্লাক বোর্ড রাখার জায়গা নেই। খাতাপত্র রাখার জায়গা নেই। পড়াশোনা ঠিকমতো করানো যাচ্ছে না। মেহেরনগর স্কুলের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা বলছেন, সেখানে পাঠদানের কোনো পরিবেশ নেই। ভবন না থাকায় স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এলাকার শিশুরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, চলতি বর্ষা মৌসুমে বেলকুচি উপজেলার বড়ধূল ইউনিয়নের দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীগর্ভে চলে গেছে। ওই দুটি স্কুলের শিক্ষার্থীরা যেন ঝরে না পড়ে, সে জন্য শিক্ষকদের শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখতে বলেছি। চৌহালী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহজাহান সেখ জানান, এ উপজেলায় সাতটি স্কুল নদীতে বিলীন হয়েছে। এর মধ্যে তিনটিতে টিনের ছাউনি তুলে এবং চারটিতে স্কুলের প্রতিবেশীর বাড়িতে ছাপড়া তুলে কোনোরকমে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখা হয়েছে। এতে শিক্ষার পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছে উল্লেখ করে বলেন, স্কুলের তথ্য শিক্ষা অধিদফতরে জানানো হয়েছে। প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় ভবন নির্মাণ করা হলে এসব স্কুলে শিক্ষার পরিবেশ ফিরে আসবে।  

 

সর্বশেষ খবর