শুক্রবার, ২০ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ব্যস্ততা লেপ তোশকের দোকানে

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

ব্যস্ততা লেপ তোশকের দোকানে

কয়েক দিনের বৃষ্টির পর বগুড়ায় কুয়াশা পড়ছে। সকালে মাঠে ধানের ডগায়, ঘাসে জমে থাকছে শিশির। উত্তরে হাওয়া বলে দিচ্ছে আসছে শীত। প্রকৃতির পালাবদলে হেমন্তের সঙ্গে শীতের আগমনিবার্তা পেয়ে যায়। সন্ধ্যার পর থেকে অনুভূত হচ্ছে শীত শীত ভাব। সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত বাড়তেই বগুড়ার গ্রামাঞ্চলে হালকা কুয়াশা পড়ছে। দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে আবহাওয়া। শীতের আগমনিবার্তায় লেপ-তোশক তৈরিতে ব্যস্ততা বেড়েছে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগর ও ব্যবসায়ীরা। বছরের অন্যান্য সময় বেচাকেনা কম হলেও শীত মৌসুমে বিক্রি কয়েক গুণ বেড়ে যায়। লেপ-তোশক তৈরির কারিগররা জানান, কাপড় ও তুলার দাম বেশি হওয়ায় খরচ আগের তুলনায় কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে একটি লেপ বানাতে খরচ নেওয়া হচ্ছে ১ হাজার ২০০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে তুলা আর কাপড়ের গুণগত মানের ওপর ভিত্তি করে লেপ-তোশকের দাম নির্ধারণ করেন তারা। জেলার ব্যবসায়ীরা জানান, বছরের অন্য সময় মাসে ২-৪ জন তোশক কিনতে এলেও লেপের চাহিদা একেবারেই থাকে না। শীতের শুরু থেকে অন্তত চারটি মাস লেপ-তোশক বেশি বিক্রি হয়।

এ সময় সবচেয়ে বেশি লেপ বিক্রি হয়ে থাকে। যে কারণে চাহিদার কথা মাথায় রেখে লেপ সেলাই কর্মীদের সংখ্যাও বাড়াতে হয়।

 

বগুড়া শহরের কলোনি এলাকার কারিগর মো. ফারুক জানান, তিনি ২২ বছর ধরে এই পেশার সঙ্গে জড়িত। শীতের সময় কাজের চাপ একটু বেশি থাকে। এ সময় গড়ে প্রতিদিন একজন কারিগর তিন-চারটি লেপ-তোশক তৈরি করতে পারেন। এ ছাড়া গত শীতের তুলনায় বিভিন্ন প্রকার তুলা ও কাপড়ের দাম বেড়েছে। যে কারণে প্রতিটি লেপ-তোশকে আকার ভেদে ১৫০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা বেশি খরচ পড়ছে। তিনি আরও জানান, একটি লেপ সেলাই করলে মজুরি পান ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। আর তোশক সেলাই করলে পান ৫০০ টাকা। তিনি গড়ে প্রতিদিন ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা উপার্জন করেন।

ওই এলাকার ব্যবসায়ী বেস্ট ওয়ান বেডিং অ্যান্ড স্টোরের স্বত্বাধিকারী মো. নাছির উদ্দিন জানান, কাপড় ও তুলার দাম বেশি হওয়ায় খরচ আগের তুলনায় কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়া এটি একটি মৌসুমি ব্যবসা। বর্তমানে শ্রমিক সংকটের কারণে অনেক ক্রেতাকে বাধ্য হয়ে ফিরে দিতে হয়। শ্রমিক মজুরিও বেড়েছে। এ বছর তুলার দামও বেড়ে গেছে। ইন্দোনেশিয়ার তুলা ৩৫০ টাকা কেজিতে কিনতে হচ্ছে, যা গত বছর ছিল ৩০০ টাকা। এ ছাড়াও দেশি শিমুল তুলা বিচি ছাড়া ৬০০ টাকা ও বিচিসহ ৩২০ টাকা কেজিতে কিনতে হচ্ছে। তবে অন্যান্য তুলার চেয়ে বাজারে সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে ইন্দোনেশিয়া তুলার। তিনি জানান, ৪-৫ হাত একটি লেপ তৈরি করতে খরচ হয় ১ হাজার ৫০০ টাকা। 

লেপ তৈরি করতে আসা শহরের বেজোড়া এলাকার হোসেন আলী জানান, শীত আসছে তাই আগে থেকেই লেপ তৈরি করার প্রস্তুতি নিয়েছি। পরিবারের শীত নিবারণের জন্য লেপ তৈরি করতে এসেছি। গত বছরের চেয়ে এ বছর সবকিছুর দাম বেশি। যে কারণে আগের চেয়ে দাম একটু বেশি। ৪ থেকে ৫ হাত একটি লেপ তৈরিতে খরচ পড়েছে ১ হাজার ৮০০ টাকা।

 

সর্বশেষ খবর