রবিবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

যমুনার গতিপথ পরিবর্তনে জনদুর্ভোগ

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

যমুনার গতিপথ পরিবর্তনে জনদুর্ভোগ

বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া যমুনা নদীর গতিপথ পরিবর্তন হচ্ছে। বর্ষাকালে নদী ভরাট থাকায় গতিপথ তেমন বোঝা যায় না। শুকনা মৌসুমে নদীর মূল প্রবাহ থাকছে সারিয়াকান্দির কালিতলা গ্রয়েন বাঁধ থেকে পূর্ব দিকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে। মূল প্রবাহ সরে যাওয়ায় নতুন নতুন চর জাগতে শুরু করেছে। নদীর গতিপথ পরিবর্তনে জনদুর্ভোগেরও সৃষ্টি হয়েছে। নদীর নাব্য সংকটে উপজেলার হাটশেরপুর ইউনিয়নের হাসনাপাড়া, নিজবলাইল, শাহানবান্ধা এবং সদর ইউনিয়নের পারতিত পড়লের সামনের নৌঘাট শুকনা মৌসুমে বন্ধ থাকছে। এ ছাড়া উপজেলার জনবহুল কালিতলা নৌঘাট ৫ কিলোমিটার দূরে কর্ণিবাড়ী ইউনিয়নের দেবডাঙায় স্থানান্তর করতে হয়। ঘাটটি দিয়ে যমুনার পূর্বের জেলাগুলোর সঙ্গে পশ্চিমের জেলাগুলোর সংযোগ রয়েছে। ফলে এই নৌঘাটে যাতায়াত করা হাজারো পথচারী সীমাহীন ভোগান্তির শিকার হন। সারিয়াকান্দির বিভিন্ন ধরনের কৃষি ফসলের ৭০ ভাগ যমুনার চরাঞ্চলে উৎপাদন হয়। নদীর নাব্য না থাকায় এসব ফসল ঘোড়ার গাড়ি বা গরুর গাড়িতে করে পরিবহন করতে হয় চড়া ভাড়া দিয়ে।

বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, স্বাধীনতার আগে যমুনা নদীর অবস্থান ছিল বাম তীর ঘেঁষে। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে নদী ভাঙতে ভাঙতে ডান তীর ঘেঁষে অবস্থান নেয়। ডান তীরে নদী শাসনের কাজ হওয়ায় এখন নদী আবারও বাম তীর ঘেঁষে অবস্থান করছে। ১৯৮৫ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ২৫ বছরে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সারিয়াকান্দি এলাকায় যমুনা নদীর ডান তীরে ৫৬০ মিটার ভেঙেছে। ২০১০ সালের পর থেকে সরকারিভাবে নদী শাসনের কাজ হওয়ায় এই এলাকায় বড় আকারে আর ভাঙন দেখা যায়নি। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সারিয়াকান্দির কালিতলা গ্রয়েন বাঁধ থেকে পূর্ব দিকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে নদী অবস্থান করছে। কয়েক বছর আগে নদী কালিতলা গ্রয়েন বাঁধের সঙ্গে ছিল। নদীটি পূর্ব দিকে কিছুটা সরে যাওয়ায় সারিয়াকান্দি উপজেলার যমুনা নদীর ডান তীরের সামনে চালুয়াবাড়ী, হাটশেরপুর, কাজলা এবং সারিয়াকান্দি সদর ইউনিয়নে বিশালাকার চর সৃষ্টি হয়েছে। এসব এলাকা দিয়ে বয়ে যাওয়া একসময়ের প্রমত্তা যমুনা এখন গতিপথ পরিবর্তন করে বাম তীর ঘেঁষে জামালপুরের দিকে বাঁক নিয়েছে। ১৯৫৮ সাল থেকে প্রমত্তা যমুনায় ভাঙন শুরু হয়। ১৯৭৭ সালের পর এই ভাঙন ভয়াবহ রূপ নেয়। ফলে বিভিন্ন সময়ে ডান তীরের ১০৫টির বেশি গ্রাম নদীভাঙনের শিকার হয়। যমুনা নদীর গতিপথ পরিবর্তনের ফলে উপজেলার চারটি ইউনিয়নের জমি জেগে উঠেছে। এসব জমিতে ফসল উৎপাদন হচ্ছে। বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাজমুল হক জানান, ১৯৮৫ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত গত ২৫ বছরে সারিয়াকান্দি এলাকায় যমুনা নদীর ডানতীরে ৫৬০ মিটার ভেঙেছে। ২০১০ সালের পর থেকে নদীশাসনের কাজ হওয়ায় এই এলাকায় বন্যায় বড় আকারে ভাঙেনি।

সর্বশেষ খবর