শুক্রবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

খানাখন্দে দুর্ভোগে পর্যটক-যাত্রী

সঞ্জয় দাস লিটু, পটুয়াখালী

খানাখন্দে দুর্ভোগে পর্যটক-যাত্রী

এক যুগেরও বেশি সময় ধরে সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে পটুয়াখালী আন্তজেলা বাস টার্মিনাল। এর বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতে তলিয়ে যায় জেলার এ ব্যস্ততম স্থান। জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে টার্মিনাল ভবনটিও। প্রতিদিন এই টার্মিনাল থেকে জেলার অভ্যন্তরীণ রুট, পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা, বরিশাল, বরগুনা ও দেশের বিভিন্ন এলাকায় পর্যটকসহ যাত্রীরা যাতায়াত করে থাকেন। এখানে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় তাদের। বাস মালিকদের অভিযোগ, সামান্য বৃষ্টিতেই টার্মিনালের ভিতরে ও আশপাশে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এখানে বড় বড় গর্ত হওয়ায় বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক লাগোয়া স্থান থেকে বাস ছাড়তে বাধ্য হয় চালকরা। ফলে বাসস্ট্যান্ড-সংলগ্ন মহাসড়কে লেগে থাকে যানজট। যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন ঢাকা-বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটায় চলাচলকারী পর্যটক ও আন্তজেলা পরিবহনের যাত্রীরা।

জানা যায়, ২০০৩ সালে আড়াই একর জমির ওপর ১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) নির্মাণ করে আন্তজেলা বাস টার্মিনাল। ২০০৯ সালে এটি পৌরসভার কাছে হস্তান্তর করা হয়। সেই থেকে এটি পৌরসভা দেখভাল করে। সংস্কার না করায় বর্তমানে বাস টার্মিনালটির করুণ দশা। বর্ষা মৌসুমে যাত্রীদের যেন দুর্ভোগের শেষ নেই।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পদ্মা সেতু চালুর পর থেকে কুয়াকাটার সঙ্গে সারা দেশে ফেরিবিহীন যোগাযোগব্যবস্থা হওয়ায় এ মহাসড়কে পরিবহন ও যাত্রীদের চাপ বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। এ ছাড়া পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, পায়রা পোর্টসহ মেগা উন্নয়ন প্রকল্পের কারণে সড়ক পথে যানবাহন চলাচল ব্যাপক বেড়েছে।

পটুয়াখালীর শহরের প্রবেশমুখ চৌরাস্তা থেকে একটু দক্ষিণে পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়ক লাগোয়া বাস টার্মিনাল। জেলার অভ্যন্তরীণ সাতটি রুটের ১৫০টি যাত্রীবাহী পরিবহন ও বরিশাল-বরগুনাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় চলাচলকারী পরিবহনে প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ হাজার যাত্রী এ টার্মিনাল দিয়ে যাতায়াত করে। বাস চালকরা জানান, অল্প বৃষ্টিতেই বাস টার্মিনালে পানি জমে থাকে। অভ্যন্তরীণ রুটে চলাচলকারী বাসগুলো মহাসড়কের পাশে জমে থাকা কাদা পানির মধ্যে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। যাত্রীরা কষ্ট করে এর মধ্যেই বাসে ওঠানামা করছেন। পটুয়াখালী বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন মৃধা বলেন, ২০০৯ সালে উদ্বোধন হওয়ার পর বাস-টার্মিনালে কোনো উন্নয়নকাজ হয়নি। কোনো ধরনের সংস্কার করা হয়নি। পাবলিক টয়লেট পর্যন্ত সংস্কার করা হয়নি। সেপটিক ট্যাঙ্কের ময়লা ফ্লোরে এবং বাইরে চলে আসে। এখানে ড্রেন নেই, গণশৌচাগার নেই। যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। বর্ষার সময় পানি এমনভাবে জমে, যাত্রীরা জুতা-সেন্ডেল খুলে তারপর বাসে উঠতে বাধ্য হয়। পৌর মেয়র মহিউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, বাসস্ট্যান্ডটা একটু খারাপ অবস্থায় আছে। প্রতিবছর আমরা খানাখন্দগুলো মেরামত করি। এ বছরে ডিজাইন ড্রইং হয়ে গেছে, নভেম্বর বা ডিসেম্বর মাসে টেন্ডার আহ্বান করা হবে এবং কাজ বাস্তবায়ন হবে। বছরটা একটু খারাপ যাচ্ছে বর্ষার কারণে।

সর্বশেষ খবর