বুধবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
লক্ষ্মীপুর

৬০০ কোটি টাকার সুপারি উৎপাদন

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

৬০০ কোটি টাকার সুপারি উৎপাদন

সুপারি উৎপাদনখ্যাত জেলাগুলোর মধ্যে লক্ষ্মীপুর অন্যতম। এ জেলায় ছোট-বড় বাগান মিলে ৭ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে সুপারির চাষ হয়েছে। উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় লাভজনক অর্থকরি এ পণ্য ঘিরে দেখা দিয়েছে ব্যাপক সম্ভাবনা। এবার মৌসুমে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় সুপারি আকারে ছোট হয়েছে। ফলন হয়েছে বেশ, তবে দাম অন্যবারের তুলনায় কিছুটা কম বলছেন চাষিরা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখানকার সুপারি বেশ সুস্বাদু। জেলার চাহিদা মিটিয়ে সুপারি এখন বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি হচ্ছে। এ বছর সুপারি উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৬০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে, ধারণা করছে কৃষি বিভাগ। জানা যায়, উপকূলীয় এ জেলার পাঁচটি উপজেলার প্রতিটি বাড়ির আঙিনা ও পতিত জমিতে রয়েছে সুপারি বাগান। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে বৃষ্টির পানিতে সুপারি গাছে ফুল আসে। পুরোপুরি পাকা হয়ে হলুদ রং ধারণ করে কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাসে। কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাস সুপারির ভরা মৌসুম। জেলার রামগঞ্জ, রায়পুর, সদর, রামগতি ও কমলনগর উপজেলার প্রতিটি পাড়ামহল্লার সুপারি বিক্রি করতে দেখা যায় কৃষক বা গৃহস্থদের। সাপ্তাহিক হাটেও সুপারি বিক্রি করা হয়। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা লক্ষ্মীপুরে এসে সুপারি কিনে নিয়ে যায়। চলতি বছর আকার অনুযায়ী প্রতি পোন (৮০টি) ১০০-১৩০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কাউন (১৬ পোন) সুপারি বিক্রি হচ্ছে ১৮০০-২০০০ টাকা।

স্থানীয় কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, গেল বছর জেলায় সুপারি উৎপাদন হয়েছে ৬৪ হাজার ৭৫০ টন। চলতি বছর ৭ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭০ হাজার টন। যার বাজার মূল্য ৬০০ কোটি টাকার বেশি। সদর উপজেলার পশ্চিমাঞ্চল, রায়পুর ও রামগঞ্জে সবচেয়ে বেশি সুপারি উৎপাদন হয়। এখানে উৎপাদিত সুপারি ভিজিয়ে ও শুকিয়ে সংরক্ষণ করা হয়। যা সারা বছর বিক্রি হয়। স্থানীয় কয়েক কৃষক জানান, সুপারি উৎপাদনে লাভবান হওয়ায় প্রতি বছর এ অঞ্চলের মানুষ নতুন নতুন সুপারি বাগান তৈরিতে ঝুঁকছেন। অক্টোবর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত জেলার সুপারির হাটগুলো জমজমাট থাকে। চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থান থেকে আসা বেপারিরা সুপারি ক্রয় করেন এখানকার হাট থেকে। সুপারি চাষের সঙ্গে জড়িত শ্রমিকরা জানান, সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গাছ থেকে সুপারি সংগ্রহ করা হয়। আবহাওয়া ভালো থাকলে গাছ থেকে সুপারি সংগ্রহ করে প্রত্যেক শ্রমিকের দিনে আয় হয় ৭০০-৮০০ টাকা। লক্ষ্মীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) মোহাম্মদ রেজাউল করিম ভূঁঞা বলেন, সুপারি চাষ, পরিচর্যা, ফসল সংগ্রহ ও সংরক্ষণের বিষয়ে চাষিদের কৃষি বিভাগ প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বেশি বেশি সুপারি গাছ রোপণ, রক্ষণাবেক্ষণ, কৃষক ও সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগের আন্তরিক প্রচেষ্টায় সুপারি জেলার অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে, মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

সর্বশেষ খবর