বৃহস্পতিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

কঠিনচীবর দান উৎসব

রাঙামাটি প্রতিনিধি

পাহাড়ে মাসব্যাপী চলছে কঠিনচীবর দান উৎসব। লাখো পুন্যার্থীর শ্রদ্ধায় সিক্ত পার্বত্যাঞ্চলের বিভিন্ন বিহারের ভিক্ষু সংঘ। রাঙামাটি রাজবনবিহারে মহাদানযজ্ঞ দানের মধ্য দিয়ে শেষ হবে মাসব্যাপী চলা এ কঠিন চীবর দান উৎসব। এ উৎসবের আমেজ ছড়িয়েছে গোটা পার্বত্যাঞ্চলে। দূর-দূরান্ত থেকে আসছে ভক্ত, পুণ্যার্থীরা।

 ভিক্ষু সংঘের সাধু সাধু সাধু ধ্বনিতে শান্তির বার্তা দিয়ে যাচ্ছে বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরুরা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি প্রবারণা পূর্ণিমার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে কঠিনচীবন দান উৎসব। উৎসব ঘিরে রাঙামাটিতে বইছে আনন্দ উল্লাস।

রাঙামাটির প্রতিটি জেলা উপজেলার বৌদ্ধ বিহারগুলোতে পালন করা হচ্ছে এ কঠিন চীবন দানোৎসব। প্রতিদিন থাকছে চীবর দানের আয়োজন। মাসব্যাপী বিহারে বিহারে ঘুরে বৌদ্ধ পুন্যার্থীরা। ভাক্তদের চীবন দান করবেন।

বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মতে, বৌদ্ধ ভিক্ষুরা তিন মাস বর্ষাবাস শেষে প্রবারণা পূর্ণিমার দিন বিহারে ফিরে আসে। প্রবারণা পূর্ণিমা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় বৃহত্তর ধর্মীয় উৎসব। এ প্রকারণার মধ্য দিয়ে ভিক্ষুদের বিহারে আমন্ত্রণ জানায় পুন্যার্থীরা। বৌদ্ধ ভিক্ষুরা ফিরে আসার আনন্দে বস্ত্রদান অর্থাৎ কঠিন চীবর দানোৎসবের আয়োজন করা হয়। সারা বছরের জন্য ভিক্ষুদের পরিদানের বস্ত্র দান করা হয় চীবর দান উৎসবের মধ্য দিয়ে। এরই মধ্যে ধনপাতা বৌদ্ধ বিহার, বদ্ধু আংকার বৌদ্ধ বিহার ও সুবলং বৌদ্ধ বিহারে শেষ হয়েছে চীবর দানোৎসব।

স্থানীয় সেবিকা চাকমা বলেন, এ চীবর দানকে কঠিন চীবর দান বলার একটি কারণ আছে। কারণ ভিক্ষুদের পরিদানে বস্ত্র বিশেষভাবে তৈরি করা হয়। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নারীরা মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তুলা থেকে সুতা তৈরি করে। তা রং করে শুকিয়ে প্রস্তুত করা হয় কাপড় বুনোন করার জন্য। রংটাও গাছের সিখর আর বাকল দিয়ে তৈরি করা হয়। পুরাপুরি প্রাকৃতিকভাবে। চরকায় সুতা কাটার পর। কোমর তাঁতে তৈরি করা হয় এ চীবর। যা আসলে অনেক কষ্ট সাধ্য। তাই এটাকে কঠিন চীবর বলা হয়।

রাজবন বিহার উপাসক-উপাসিকা পরিষদের সভাপতি গৌতম দেওয়ান বলেন, বছরের এ একটা সময় দূর-দূরান্ত থেকে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা সমাবেত হয় বিহারে। তখন সবার একটা উদ্দেশ্য থাকে তা হচ্ছে চীবর উৎসর্গ করা।

রাঙামাটি রাজ বনবিহার সূত্রে জানা যায়, ২৩ ও ২৪ নভেম্বর রাঙামাটিতে শুরু হচ্ছে ৪৮তম কঠিন চীবর দান উৎসব। তার জন্য এরই মধ্যে প্রস্তুতি শুরু করেছে বিহার কর্তৃপক্ষ।   

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর