রবিবার, ১২ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

৫০০ কোটি টাকার শীতবস্ত্র বিক্রির আশা

গোবিন্দগঞ্জের নয়ারহাট হোসিয়ারি পল্লী

সাইফুল মিলন, গাইবান্ধা

৫০০ কোটি টাকার শীতবস্ত্র বিক্রির আশা

ডিজিটাল মেশিনে আধুনিক পণ্য উৎপাদনের পাশাপাশি তাঁতের খট খট শব্দে মুখর গ্রামের পর গ্রাম। ছয় মাস ধরে উৎপাদন করা পণ্যের মজুদ রয়েছে। সেইসঙ্গে শীতবস্ত্র তৈরি চলছে ছোট-বড় কারখানায়। শীত সামনে রেখে এসব পণ্য বাজারজাত করার যেন ধুম পড়েছে কারখানাসহ এখানকার সর্বত্র। শীতবস্ত্র বিক্রির জন্য প্রস্তুত এখানকার ৪ শতাধিক বিপণি বিতান। গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নয়ারহাট ও কয়েকটি গ্রামের ব্যবসায়ীদের আশা এবারের মৌসুমে বিক্রি হবে অন্তত ৫০০ কোটি টাকার শীতবস্ত্র। দেশে শীতবস্ত্রের চাহিদার একতৃতীয়াংশ গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নয়ারহাটে উৎপাদন হয়, দাবি এখানকার ব্যবসায়ীদের। রপ্তানির সুযোগ পেলে সম্ভাবনাময় হোসিয়ারি শিল্পে নতুন মাত্রা যোগ করা সম্ভব, মনে করেন তারা। গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থেকে মহিমাগঞ্জ সড়ক ধরে যেতে মাঝামাঝি অবস্থান কোচাশহরের। সেখান থেকে ডানে মোড় নিয়ে যেতে হয় নয়ারহাটে। রং-বেরঙের সুতোর মিশেলে রকমারি শীতবস্ত্র দিয়ে সাজানো এখানকার ৪ শতাধিক বিপণি বিতান। প্রত্যন্ত এ গ্রামে একবারে মধ্যেখানে গড়ে ওঠা নয়ারহাট নামের শীতবস্ত্রের এ বাজারের শো-রুমগুলোয় পাওয়া যাচ্ছে সোয়েটার, কার্ডিগান, মোজা, মাফলার, টুপিসহ ১৫০ ধরনেরও বেশি শীতবস্ত্র। আকার ও ডিজাইন ভেদে দাম নির্ধারণ করেন ব্যবসায়ীরা। এখানে প্রধানত পাইকারী বেচাকেনা চলে। সারা দেশ থেকে আসা দোকানিরা এখানকার প্রধান ক্রেতা। পোশাক তৈরি হয় গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার পেপুলিয়া-কানাইপাড়া, মুকুন্দপুর, শক্তিপুর, ধারাইকান্দী, জগদীশপুর, কুমিড়াডাঙ্গা, গোপালপুর, শ্রীপতিপুর, পুনতাইড়, উলিপুর, দামগাছা, শালমারা, কলাকাটাসহ বিভিন্ন গ্রামে। পরে তা নয়ারহাট থেকে পাইকারদের হাত ঘুরে ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। উদ্যোক্তারা জানান, ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর মাড়োয়ারিদের কাছে পাওয়া হস্তচালিত দুটি যন্ত্র দিয়ে শুরু হয় কোচাশহরের হোসিয়ারি শিল্পের যাত্রা। কোচাশহর ইউনিয়নের পেপুলিয়া গ্রামে আবদুর রহিম নামের এক ব্যক্তির বোনা মোজার মাধ্যমে হোসিয়ারি শিল্পের সূচনা। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের গ্রামে। কোচাশহরসহ এখানকার আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে হোসিয়ারি শিল্প। নারী-পুরুষ মিলে এ শিল্পের সঙ্গে এখন জড়িয়ে আছে লক্ষাধিক মানুষের জীবন-জীবিকা। এখানকার উদ্যোক্তারা আরও জানান, বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার শাওইল থেকে নিয়ে আসা ঝুটের সুতা এখানকার অন্যতম প্রধান কাঁচামাল। মানসম্মত শীতবস্ত্রের জন্য কম্পিউটারাইজড মেশিনে পাশের দেশ ভারতসহ বিভিন্ন দেশের দামি সুতাও ব্যবহার হচ্ছে এখন। তবে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ঘন ঘন বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে দুর্ভোগ বেড়েছে। নয়ারহাটের ব্যবসায়ী মাহফুজুর রহমান বলেন, রাস্তা এতটাই সরু যে, বড় ট্রাক চলাচল করতে হয়           ঝুঁকি নিয়ে। নয়ারহাট হোসিয়ারি শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমান সরকার বলেন, প্রতিদিন এ বাজারে কোটি কোটি টাকা বেচাকেনা হলেও ব্যাংকের শাখা না থাকায় টাকা জমা ও তোলার জন্য ৭-৮ কিলোমিটার দূরে গোবিন্দগঞ্জে বা মহিমাগঞ্জে যেতে হয় এখানকার ব্যবসায়ীদের। গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ প্রধান বলেন, ইতোমধ্যে এখানকার কিছু সমস্যা সমাধান হয়েছে।

সর্বশেষ খবর