মঙ্গলবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

আগাম আমন ধান কাটার ধুম

দিনাজপুর প্রতিনিধি

আগাম আমন ধান কাটার ধুম

দিনাজপুরে আগাম জাতের আমন ধান কাটা ও মাড়াই নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। জেলায় এবার ৪৭ হাজার হেক্টর জমিতে এ জাতের ধান আবাদ হয়েছে। বিভিন্ন হাট-বাজারে সীমিত আকারে উঠতেও শুরু করেছে এ ধান। ধান কেটে বাড়িতে আনায় নতুন ধানের ম-ম গন্ধে সৌরভ ছড়াচ্ছে কৃষকের ঘর। সেই সঙ্গে, ধান মাড়াই করে খড়ের ভালো দাম পাচ্ছে কৃষক। হেমন্তে নবান্নের আনন্দে সোনালি ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত কৃষক। ইতোমধ্যে বাড়ির উঠোন ভরে উঠছে নতুন ধানে। চারদিকে ধানের ম-ম গন্ধ। আনন্দ আর উৎসবে ঘরে ঘরে শুরু হয়েছে পিঠাপুলির নানা আয়োজন। গত মৌসুমে বিনা-৯০ ধান ৭৫ কেজির বস্তা বিক্রি হয়েছিল ৪ হাজার ২০০ থেকে ৪ হাজার ৩০০ টাকা। এবার তা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকা। বিনা ১৭, বিনা ৭৫, বিআর ৫১ ধান ৭৫ কেজির বস্তা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ১৫০ টাকা থেকে ২ হাজার ২৫০ টাকা। যা গত বছর ছিল ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ১০০ টাকা। রানীবন্দরের রফিকুল ইসলাম বলেন, খেত থেকে ধান কেটে আনার পর বাড়ির উঠানে মাড়াই করছি। এরপর সব ধানই বিক্রি করছি, আর কিছু রাখছি পিঠা খাওয়ার জন্য। কৃষক ও ব্যবসায়ীরা জানান, ধান বাজারে উঠতে শুরু করেছে। ধান কাটার পর অনেক কৃষক ওই জমিতে এখন আলু, ভুট্টা, গমসহ শীতকালীন সবজি চাষ করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, আর কেউ কেউ তা শুরু করেছেন। তারা বলছেন, আগাম জাতের ধান বীজতলায় বীজ বপণ থেকে মাত্র ১২০ দিনের মধ্যে কেটে ঘরে তোলা যায়। কাহারোলের কাজী কাটনা গ্রামের নাঈমুল ইসলাম জানান, আগাম জাতের ধান কাটার পর ওই জমিতে ভুট্টা লাগিয়েছেন তিনি। কাহারোলের ডহচি গ্রামের কৃষক হরিকান্ত রায় জানান, তিনি এবার আমন মৌসুমে বিভিন্ন জাতের আগাম ধান আবাদ করে লাভবান হয়েছেন। কাহারোলের বলেয়া হাটে প্রতি মণ ধান প্রকারভেদে বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ১৫০ থেকে ১ হাজার ২৮০ টাকা পর্যন্ত। পাঁচবাড়ির কৃষক গৌতম দাস বলেন, মৌসুমে আগাম জাতের বিনা ৯০ ধানের দাম বেশি হওয়ায় এবারও চাষ করেছি। কিন্তু পাইকার বা মিল মালিকরা ধানের দাম কম বলছেন। এবার ধানে লোকসান না হলেও লাভ তেমন হবে না। দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, চলতি মৌসুমে ২ লাখ ৭১ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। অতিরিক্ত ৩ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়। এর মধ্যে আগাম জাতের আমন চাষ হয়েছে ৪৭ হাজার হেক্টর জমিতে। যা গত বছর ছিল ৪৫ হাজার হেক্টর। চাল হিসেবে গড় ফলন ধরা হয়েছে হেক্টর প্রতি ৩.১১ টন।

সর্বশেষ খবর