শনিবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
আশুগঞ্জ নৌবন্দর

বছরে বাণিজ্য ১৮ হাজার কোটি টাকা

মোশাররফ হোসেন বেলাল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

বছরে বাণিজ্য ১৮ হাজার কোটি টাকা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও সার কারখানার জন্য সারা দেশে সুপরিচিত। প্রতিদিন এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে প্রায় ১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। ইউরিয়া সার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান আশুগঞ্জ কারখানা থেকে সার যাচ্ছে আওতাভুক্ত সাত জেলায়। ব্যবসা-বাণিজ্যের কারণে আশুগঞ্জ এখন দেশের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক শহর। মেঘনা নদীর তীরে গড়ে ওঠা এই শহর মূলত নদীবন্দর ঘিরেই ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসার লাভ করেছে। আশুগঞ্জ নদীবন্দরে প্রতিদিন লেনদেন হচ্ছে ৫০ কোটি টাকার বেশি। কর্মসংস্থান হয়েছে অন্তত ১৫ হাজার মানুষের। ১৮৯৮ সালে আশুগঞ্জের গোড়া পত্তন হয়। মেঘনার তীরে পাট এবং আউশ ধান বেচাকেনাকে কেন্দ্র করে গঞ্জ গড়ে ওঠে। সেই থেকেই নামকরণ হয় আশুগঞ্জ। আর এই মেঘনা নদী ঘিরে যেসব ব্যবসা কেন্দ্র গড়ে উঠেছে তার মধ্যে ধান ও চাল অন্যতম। এ দুই ব্যবসায় প্রতিদিন লেনদেন হচ্ছে ১৫ কোটি টাকার বেশি। মেঘনার বিওসি ঘাটে শত বছরেরও বেশি সময় ধরে ধানের বাজার বসছে। ধানের এই বাজারকে দেশের পূর্বাঞ্চলের সবচেয়ে বড় মোকাম ধরা হয়। প্রতিদিন ভোরের আলো ফুটতেই ধান ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাকে মুখর হয়ে ওঠে ভিওসি ঘাট। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলে ধান কেনাবেচা। দৈনিক ৫-৬ কোটি টাকার বেচাকেনা হয় আশুগঞ্জ মোকামে। জেলায় চালকল আছে প্রায় ২০০। যার অর্ধেকের বেশি আশুগঞ্জে। এসব কল থেকে প্রতিদিন ১০ কোটি টাকার বেশি চাল বাজারজাত হয়। আর চালকলগুলোতে কর্মসংস্থান হয়েছে ১০-১২ হাজার মানুষের। নদীবন্দর ঘিরে আশুগঞ্জ ফেরিঘাটে চাঙা সার, রড ও সিমেন্টসহ বিভিন্ন নির্মাণসামগ্রীর ব্যবসা। কর্তৃপক্ষ জানায়, সব মিলে এই নৌবন্দর ঘিরে বছরে বাণিজ্য হয় ১৮ হাজার কোটি টাকার। চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জসহ নানা স্থান থেকে পণ্যবাহী জাহাজ এসে ভিড়ে আশুগঞ্জ নদীবন্দরে। জাহাজ থেকে ট্রাকে পণ্য লোড এবং আনলোড কাজে কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় ১ হাজার শ্রমিকের। তবে নদীবন্দরে মাত্র দুটি জেটি থাকায় পণ্য খালাসে বিলম্ব হয়। এ ছাড়া একমাত্র ওয়্যারহাউসটি নির্মাণ হয়েছিল ভারতীয় পণ্য রাখার জন্য। ফলে এটিও ব্যবহার করতে পারছেন না স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। নেই কোনো ট্রাক ইয়ার্ড। আশুগঞ্জ শহর শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি গোলাম হোসেন বলেন, ভৌগোলিক অবস্থান এবং যোগাযোগব্যবস্থা ভালো হওয়ায় আশুগঞ্জ এখন পুরো জেলার ব্যবসা কেন্দ্র। প্রতিদিন এখানে বিভিন্ন ব্যবসায় লেনদেন হচ্ছে ৫০-৬০ কোটি টাকা। মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা গেলে বাণিজ্য দ্বিগুণ হবে। আশুগঞ্জ ও ভৈরববাজার নদীবন্দরের উপপরিচালক রেজাউল করিম বলেন, আশুগঞ্জে একটি কনটেইনার টার্মিনাল পোর্ট করা হচ্ছে। সরাসরি মোংলা এবং চট্টগ্রাম থেকে অভ্যন্তরীণ পথে কনটেইনার আশুগঞ্জে আসবে।

সর্বশেষ খবর