শনিবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

বাজারে মাছ কেটে সংসার চলে বৃদ্ধার

দিনাজপুর প্রতিনিধি

বৃদ্ধা হয়েও ভিক্ষা নয়, হাট-বাজারে মাছ কেটে সংসার চালান বীরগঞ্জের জয়ন্তী রায় (৬০)। হাট বাজারে সাধারণত পুরুষদের মাছ কেটে দিতে দেখা যায়। এ কাজে নারীদের খুব একটা চোখে পড়ে না। বর্তমানের নিত্যপণ্যের আকাশ ছোঁয়া দামে শুধু বয়স্ক ভাতা দিয়ে জীবন চালানো কঠিন। বয়সের ভারে নুইয়ে পড়া শরীরে বাসা বেঁধেছে নানা রোগ। তাই বাধ্য হয়ে একটি বটি নিয়ে বীরগঞ্জ পৌর বাজারে মাছ কাটার কাজে নেমে পড়েন। তবুও তিনি কারো কাছে হাত পাততে রাজি নন। জয়ন্তী রায় জানান, ২০ বছর আগে স্বামী পুরানু রায় মারা গেলে এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে সংসারের হাল ধরতে হয়। সন্তানদের মানুষ করতে অধিক আয়ের আশার স্বামীর ভিটে বীরগঞ্জের নিজপাড়া ইউপির দামাইক্ষেত্র গ্রাম ছেড়ে উপজেলা সদরে এসে বসবাস শুরু করেন। পৌর শহরের মাদরাসাপাড়ায় সাড়ে ৫০০ টাকা দিয়ে বাড়িভাড়া করেন। জীবনের পথচলায় অর্থ উপার্জন করতে হয়েছে কঠিন পরিশ্রম। এরপর ছেলেমেয়েকে বিয়ে দিয়ে অনেকটা একা হয়ে পড়েন। বয়সের ভারে নুইয়ে পড়া শরীরে বাসা বাধে নানা রোগ। আগের মতো কাজ করতে না পারায় কমে যায় আয়। বাধ্য হয়ে পৌর বাজারে মাছ কাটার কাজে নেমে পড়েছেন।

এতে কেউ ১০, ২০, আবার কেউ খুশি হয়ে ৪০ টাকাও দেয়। সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা অবধি মাছ কেটে দিনে ১০০ থেকে ১২০ টাকা আয় হয়।

শহরের বাসিন্দা মো. শাহজাহান বুলবুল জানান, ২  কেজি বিভিন্ন জাতের ছোট মাছ কিনেছি। এখানে মাছ বিক্রেতারা বড় মাছ কেটে দিলেও ছোট মাছ কেটে দেয় না। ছোট মাছ এখান থেকে  কেটে নিয়ে যাচ্ছি। প্রতি কেজি মাছ কাটার জন্য ২৫ টাকা করে দিতে হয়েছে।

বীরগঞ্জ পৌরবাজার মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. শহীদুল ইসলাম জানান, বাড়িতে ছোট ছোট মাছ কাটার ঝামেলা এড়াতে অনেকেই এখন এখান থেকে কেটে নিয়ে যান।

বীরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো. মোশারফ হোসেন বাবুল বলেন, বিধবা হয়েও জয়ন্তী রায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। মানুষের কাছে হাত পাতার চেয়ে কাজ করে খাওয়া অনেক সম্মানের।

সর্বশেষ খবর