কন্যাশিশুরা ঘরে বাইরে পাবলিক পরিসর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোথাও নিরাপদ নয়। গত বছরের ২২ নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত এক বছরে দিনাজপুর জেলায় নারী ও শিশু ধর্ষণের মামলা হয়েছে ৩৫টি, শিশু নির্যাতনের মামলা ৭৩টি, যৌতুকের জন্য নির্যাতনের ২৫৬টি ছাড়াও বিভিন্ন অপরাধে আরও ১৭৮টি মামলা রেকর্ড হয়েছে। দিনাজপুর প্রেস ক্লাবে গতকাল মহিলা পরিষদ দিনাজপুর জেলা শাখা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উল্লেখ করেছে। আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।

এতে আরও জানানো হয়, প্রতিদিন দেশের কোথাও না কোথাও যৌননিপীড়ন, উত্ত্যক্তকরণ, ধর্ষণ চেষ্টা, দলবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যাসহ নানান প্রকার সহিংসতার শিকার অধিকাংশই তরুণী, কিশোরী ও শিশু। এতে বিস্তারিত তুলে ধরেন সংগঠনের নেতারা। পাশাপাশি সরকারের কাছে কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয় প্রতিবেদনে।

সম্প্রতি চিরিরবন্দরে গণধর্ষণের শিকার এক তরুণীর ঘটনার সঠিক তদন্ত এবং জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে মহিলা পরিষদ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন এবং পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করে। এ ছাড়া বীরগঞ্জে স্কুলছাত্রীকে বখাটে কর্তৃক উত্ত্যক্ত এবং ওই স্কুলছাত্রীর বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনার পাশাপাশি বিরলে কিশোরীকে উত্ত্যক্ত ও অপহরণ করে ধর্ষণ ঘটনার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে শহরের পাটুয়াপাড়ায় বিয়েপরবর্তী পারিবারিক অশান্তি সুরাহা, হাজি দানেশ বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন ছাত্রীকে উত্ত্যক্তকারী ছাত্রকে শাস্তিস্বরূপ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করানো এবং খানসামার এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদানের সময় ছাত্রীদের অশ্লীল ভিডিও দেখিয়ে শ্লীলতাহানির ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম মাহমুদকে বরখাস্ত করানোর সফলতার তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে মহিলা পরিষদের ওই প্রতিবেদনে।

নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে বিচারালয়ে ধর্ষিতার চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন উপস্থাপন নিষিদ্ধ করে সাক্ষ্য আইনের বিধান পরিবর্তন এবং ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার ও ওসিসির কার্যক্রম দেশব্যাপী বিস্তৃত এবং নারী ও কন্যা নির্যাতনকারীদের রাজনৈতিক-সামাজিক-প্রশাসনিক আশ্রয়প্রশয় দেওয়া বন্ধসহ বেশকিছু সুপারিশ উপস্থাপন করা হয়েছে লিখিত প্রতিবেদনে।

মহিলা পরিষদ দিনাজপুরের অর্থ সম্পাদক রত্না মিত্র, সাংগঠনিক সম্পাদক রুবিনা আকতার, প্রশিক্ষণ গবেষণা ও পাঠাগার সম্পাদক রুবি আফরোজ প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।